দুই তীরে

আমি ভালোবাসি আমার
নদীর বালুচর
শরৎকালে যে নির্জনে
চখাচখির ঘর।
যেথায় ফুটে কাশ
তটের চারি পাশ,
শীতের দিনে বিদেশী সব
হাঁসের বসবাস।
কচ্ছপেরা ধীরে
রৌদ্র পোহায় তীরে,
দু-একখানি জেলের ডিঙি
সন্ধেবেলায় ভিড়ে।
আমি ভালোবাসি আমার
নদীর বালুচর
শরৎকালে যে নির্জনে
চখাচখির ঘর॥

তুমি ভালোবাস তোমার
ওই ও পারের বন
যেথায় গাঁথা ঘনচ্ছায়া
পাতার আচ্ছাদন।
যেথায় বাঁকা গলি
নদীতে যায় চলি,
দুই ধারে তার বেণুবনের
শাখায় গলাগলি।
সকাল-সন্ধে-বেলা
ঘাটে বধূর মেলা,
ছেলের দলে ঘাটের জলে
ভাসে ভাসায় ভেলা।
তুমি ভালোবাস তোমার
ওই ও পারের বন
যেথায় গাঁথা ঘনচ্ছায়া
পাতার আচ্ছাদন॥

তোমার আমার মাঝখানেতে
একটি বহে নদী,
দুই তটেরে একই গান সে
শোনায় নিরবধি।

আমি শুনি শুয়ে
বিজন বালুভুঁয়ে,
তুমি শোন কাঁখের কলস
ঘাটের ’পরে থুয়ে।
তুমি তাহার গানে
বোঝ একটা মানে,
আমার কূলে আরেক অর্থ
ঠেকে আমার কানে।
তোমার আমার মাঝখানেতে
একটি বহে নদী,
দুই তটেরে একই গান সে
শোনায় নিরবধি॥