পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিচার

 ইতিহাস-প্রসিদ্ধ লাল কেল্লার অন্তর্গত ব্যারাকের যে হলটি শয়নপ্রকোষ্ঠরূপে ব্যবহৃত হইত, সেই হলে ১৯৪৫ সালের ৫ই নভেম্বর প্রাতে ১০-১৫ মিনিটে সামরিক আদালত বসে। বিচারালয়ে পরিণত ব্লকটি লোহিত ও ধূসর বর্ণের প্রস্তরনির্মিত দ্বিতল অট্টালিকা; উহার নির্মাণ-প্রণালী অসংযত; কেল্লার দক্ষিণ প্রান্তে ইহা অবস্থিত। নিম্নতলে একটী অংশে সাংবাদিকগণের কক্ষ নির্দ্দিষ্ট করা হয়। সেখানে টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ অফিসের ‘প্রেস কাউণ্টার’ স্থাপিত হয়, ইহারই ঠিক উপরে দ্বিতলের একটি হল বিচারালয়ের জন্য নির্দিষ্ট থাকে। এই হলটির আকৃতি আয়তক্ষেত্রের ন্যায়। দেওয়ালগুলি খুব উঁচু। হলটির দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট ও বিস্তৃতি ২৫ ফুট। হলটির তিন দিকে প্রশস্ত বারান্দা আছে।

 হলের একদিকে নারিকেল দড়ির জাল দ্বারা আচ্ছাদিত। মঞ্চে প্রেসিডেণ্ট এবং সামরিক আদালতের অন্যান্য সদস্যের আসন নির্দিষ্ট হয়। আসামী পক্ষের এবং সরকার পক্ষের কৌসুলিগণ হলের পরবর্তী অংশে মঞ্চের সম্মুখে আসন গ্রহণ করেন। দড়ি ঘেরা একটি স্বতন্ত্র আবেষ্টনীর মধ্যে সাংবাদিকগণের স্থান নির্দিষ্ট থাকে। হলের বাকি অংশ দর্শকগণের জন্য বন্দোবস্ত করা হয়।

 সামরিক বিচারালয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রথম বিচারের দিন হইতে পর্যন্ত বিচার সমাপ্ত কাল পর্যন্ত, দিল্লীর লালকেল্লায় প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ থাকে। বিচারালয়ে উপস্থিত হইবার জন্য যাহাদের ‘স্পেশাল পাশ’ ছিল, অথবা যাঁহাদের নিকট ষ্টেশন ষ্টাফ অফিসারের অথবা অনুরূপ পাশ ছিল, কেবলমাত্র তাঁহারাই কেল্লায় প্রবেশ করিতে পারিতেন। শেষোক্ত অফিসারগণ সরকারী কর্তব্য সম্পাদনের জন্য কেল্লায় প্রবেশ করিবার অধিকারী।