পাতা:আত্মচরিত (সিগনেট প্রেস) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সময় শয়ন করিতে যাইবার সময় দেখিয়াছি, বড়ামামা পাঠে নিমগন ; আবার রাত্রিশেষে ৪টার সময় উঠিয়া দেখিয়াছি, বড়মামা পাঠে নিমগন। বিস্মিত হইয়া ভাবিয়াছি, তবে তিনি ঘামান কখন ! ১৮৫৮ সাল হইতে সোমপ্রকাশ কাগজ বাহির হইলে এই নিজন বাস ও পাঠাভ্যাস অতিরিক্ত মাত্রায় বাড়িয়া গিয়াছিল। যখন তিনি তাঁহার ছাপাখানা ও সোমপ্রকাশ কাগজ তাঁহার বাসগ্রাম চাণ্ডগড়িপোতাতে তুলিয়া লইয়া মাতলা রেলওয়ের ডেলি-প্যাসেঞ্জার হইলেন, তখনও দেখিতাম, গাড়ি আসিতে বিলম্পব আছে, নানাজনে নানা কথা কহিতেছে, তিনি একপাশে তন্মানসক হইয়া কলেজে যাহা পড়াইবেন, সেই পােস্তক পড়িতেছেন। গাড়ির মধ্যে তাঁহার সঙ্গে উঠিয়া অনেকবার দেখিয়াছি, নানাজনে নানা প্রসঙ্গ করিতেছেন, তিনি কিছতেই বড় একটা যোগ দিতেছেন না, হাঁ-হাঁ করিতেছেন মাত্র; অধিকাংশ সময় হয় নয়ন মাদ্রিত করিয়া ঢলিতেছেন, না হয় কলেজের পস্তক দেখিতেছেন। কেবল, যাহাতে কোনো অন্যায় বা অধমের প্রতিবাদ আছে এরােপ কোনো আলোচনা উঠিলে, ও তাঁহার মত জিজ্ঞাসা করিলে, তাঁহার মখশ্রী বদলিয়া যাইত; অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ করিতেন। বলিতে কি, তিনি ট্ৰেনে যে-কামরাতে থাকিতেন, সেই সময়ের জন্য সে-কামরার হাওয়া যেন উন্নত ভােব ধারণ কারিত। কত ব্যাকাযে তাঁহার এমনি গাঢ় অভিনিবেশ ও চিত্তের এরপে অদভুত একাগ্রতা দেখিতাম যে, তিনি যখন বাড়িতে থাকিতেন, তখন দেখিলে মনে হইত। যে সোমপ্রকাশ লেখা ভিন্ন তাঁহার পথিবীতে অন্য কায নাই; আবার কলেজে গিয়া যখন বসিতেন, তখন দেখিলে মনে হইত। যে কলেজে পড়ানো ছাড়া তাঁহার পথিবীতে অন্য কায নাই। বাস্তবিক, তিনি যে কাজটা একবার কতব্য বলিয়া ধরিতেন, তাহা সমগ্র হদিয়ের সহিত ধরিতেন; ক্ষতিকে ক্ষতি বলিয়া জ্ঞান করিতেন না এবং সে কাব্য উদ্ধার না করিয়া ছাড়িতেন না। ইহার দই একটি দন্টান্ত উল্লেখ করিতেছি। একবার তিনি একদিন প্রাতে প্রাতঃকৃত্য সমাপন করিয়া আসিতেছেন, এমন সময় গোপজাতীয়া একটি বিধবা যাবতী কাঁদিতে-কাঁদিতে সেই পথ দিয়া চলিয়াছে। বড়মামা তাহার ক্লান্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করাতে সে বলিল যে, গ্রামের একজন ধনীলোক তাহাকে দাসী করিয়া বাড়িতে রাখে; সেই অবস্থাতে তাহাকে প্রলোভন দেখাইয়া বিপথে লইয়া যায় এবং তৎপরে তাহাকে সসত্ত্বা দেখিয়া তাড়াইয়া দিয়াছে। সে তখন নিরাপায়। শনিয়া বড়মামার ক্রোধাগিন জবলিয়া উঠিল। তিনি প্রথমে সেই ধনীর নিকটে লোক পাঠাইয়া ঐ হতভাগিনীর ভরণপোষণের উপষিক্ত অর্থ সংগ্রহ করিবার চেন্টা করিলেন। তাহাতে অকৃতকায হইয়া রাজদরবারে অভিযোগ উপস্থিত করিলেন, নিজে ব্যয় দিয়া মোকদ্দমা চালাইবার যোগাড় করিলেন। এই অবস্থাতে বোধহয় ঐ ধনীব্যক্তি সেই সন্ত্রীলোককে যাবজীবন মাসে চারিটিাকা করিয়া দিতে রাজি হইল। তৎপরে বিধবার গভের সন্তানটি যাহাতে নন্ট না হয় মামা তাহার উপায় করিলেন, এবং মাতা-পত্রের রক্ষার বন্দোবসত করিয়া দিলেন। আর একটি দন্টান্ত এই। গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হইয়া মাতুল মহাশয় অনভব করিতে লাগিলেন যে, গ্রামে একটি ভালো ইংরাজী স্কুল থাকা আবশ্যক। তৎপাবে গ্রামের জমিদারবাবদের স্থাপিত একটি স্কুল ছিল। প্রথমে বড়মামা তাঁহাদের সঙ্গে যোগ দিয়া সেটিকে ভালো করিবার প্রয়াস পাইলেন। দই-তিনবৎসরের মধ্যেই অনভব করিলেন যে সে প্রয়াস ব্যথা। তখন নিজের উপরেই স্কুলটির উন্নতি সাধনের সম্পপণ্য NS bio (My SR) Rbo"S