পাতা:আনন্দী বাঈ - সখারাম গণেশ দেউস্কর.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ অধ্যায়
৪৩

বাক্যে ব্যথিত করে। বোষ্টন নগরে তাঁহাকে লইয়া গিয়া খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিতা করিবার জন্য শ্রীমতী জন্সন ইহার পরও চেষ্টা করিতে বিরত হয় নাই। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, এই সকল নির্য্যাতনের কথা আনন্দী বাঈ বহুদিন পর্য্যন্ত তাঁহার স্বামীকেও জ্ঞাপন করেন নাই। কেবল তাহাই নহে, অনেক পত্রেই তিনি সাধারণ-ভাবে শ্রীমতী জন্সনের প্রশংসাই করিয়াছেন। আমেরিকায় পৌঁছিবার বহুদিন পরে তিনি একখানি পত্রে প্রসঙ্গক্রমে স্বীয় স্বামীকে এই মর্ম্মে লিখিয়াছিলেন—

 “আজ পর্য্যন্ত যে কথা আপনাকে জ্ঞাপন করি নাই, অদ্য তাহা জানাইতেছি। শ্রীমতী জন্সনের দুর্ব্ব্যবহারের বিষয় অনেক বার আপনাকে বিস্তারিতরূপে জানাইব, মনে করিয়াছিলাম, কয়েকবার লিখিতেও বসিয়াছিলাম; কিন্তু সে কথা লিখিতে আমার এত কষ্ট হয় যে, অনেকবার অর্দ্ধ লিখিত পত্র ছিঁড়িয়া ফেলিয়াছি—অশ্রুমোচন করিয়া বহু ক্ষণ পরে চিত্তকে শান্ত করিতে হইয়াছে! তথাপি সে বিষয়ের আভাষ দিবার জন্য সংক্ষেপে দুই একটি কথা লিখিতেছি।” এই পত্রেও তিনি সকল কথা বিস্তারিত ভাবে লিপিবদ্ধ করিতে পারেন নাই। বহু প্রকারে নির্য্যাতনভাগিনী হইয়াও ক্ষমাশীলা আনন্দী বাঈ পরনিন্দা-বিষয়ে মূক-স্বভাবা ছিলেন।

 যথাসময়ে আনন্দী বাঈ রোশেলের নিকটবর্ত্তী বন্দরে উপনীত হইলেন। তাঁহার প্রত্যুদ্গমনের জন্য শ্রীমতী কার্পেণ্টার বন্দরে উপস্থিত হইয়াছিলেন। আনন্দী বাঈ ষ্টীমার হইতে