পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
আফগানিস্থান ভ্রমণ

ভালবাসে কিন্তু গ্রাম্য জীবনের কষ্ট সহ্য করতে রাজি নয়। চিৎকার করে আকাশ ফাটিয়ে দিতে এরা বেশ পটু কিন্তু কেউ যদি একটা চড় মারে তবে সেই চড় ফিরিয়ে দেবার সাহস রাখে না। গ্রামের লোকের খবরদারি করতে পুলিশ সব সময় সক্ষম হয় না। নিজেদের আত্মরক্ষার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হয়। কিন্তু হিন্দুৱা এদিকে একেবারে উদাসীন। যাদের আত্মরক্ষা করার ক্ষমতা নেই, তাদের গ্রামে বাস করা উচিত নয়। আফগান সরকার শান্তিপ্রিয় হিন্দুদের শহরবাসী করে ভালই করেছেন।”

 আমার পোশাক হিন্দুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। মাথায় শোলার হেট্, গায়ে কোট এবং পরনে ব্রিচেজ্। পাক্কা কাফেরি ধরণের পোশাক। এরূপ পোশাক সাধারণত হিন্দুরা ব্যবহার করতে সাহস করে না। তাদের ধারণা, এরূপ পোশাক পরলে ইউরোপীয় সভ্যতা-বিরোধী পাঠানগণ তাদের হত্যা করবে। সেজন্যই একজন জিজ্ঞাসা করেছিল আমার প্রাণের মায়া আছে কি না? আমার প্রাণের মায়া তখনও ছিল এখনও আছে, তা বলে সকল কাজেই কসাইখানার জীব হতে আমি রাজি ছিলাম না। আমি ওদের বলতে বাধ্য হলাম, তোমরা যে ভাবে থাক সে ভাবে আমি জীবন ধারণ করতে রাজি নই। আমার পোশাক আমার ইচ্ছামত হবে, কেউ যদি প্রতিবাদ করে তবে শক্তি অনুযায়ী সমুচিত প্রত্যুত্তর দেবে।

 সংগের পাঠান ছেলেটির কাছে আরও শুনলাম, এরা একে অন্যে যখন ঝগড়া করে তখন মারামারির পরিবর্তে পরস্পরের কাপড়ই ছেঁড়ে। একজনের কাপড় যখন অন্যজন ছিঁড়তে আরম্ভ করে তখন চিৎকার করে হট্টগোল বাধিয়ে দেয়। পাঠানরা কখনও এরূপ দাংগা মেটাতে যায় না। দূর থেকে দেখে আর হাসে।

 স্থানীয় হিন্দুদের কাছ হতে বিদায় নিয়ে সেদিনটি বিশ্রাম করলাম এবং পরদিন ফের পথে বেরিয়ে পড়লাম। এখান হতে কাবুলে দুটি পথ গিয়েছে। একটি পথ চারবাগ এবং বেনুধ হয়ে সোজা এক নম্বর কাবুলে গিয়েছে। আমার সেদিকে