পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

জিজ্ঞেস করলুম, “হাস্‌ছিস যে? বেচারীর অসুখ করেছে, আর তুই কিনা হাসছিস্!” রাঁধুনী চোখ টিপে আমাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বললো, “অসুখ কোথা? তুমি যেমন হাবা মনিষ্যি, দিদিমণির খোকা হবে গো, খোকা হবে।” শুনে হঠাৎ আমার ভিতরটা কি যেন আঘাত পেয়ে গুটিয়ে কুঁক্‌ড়ে গেল, ব্যথায় মনটা মূক হয়ে রইল। যে এমন ভাবে সর্ব্বস্ব ঢেলে নিবিড় প্রেমে আমার হয়েছে তার গর্ভে আর এক জনের সন্তান! এ যেন আমি কিছুতেই সইতে পারছি নে, অথচ আমি বেশ জানি তার স্বামী আছে, এই কোমল ভীরু অসহায় নারী সেই গুরু গম্ভীর স্বামীরই কথায় ওঠে বসে।

 তার পরদিন যখন তার দেখা পেলুম তখন তাকে যেমন রোগা ও ক্লান্ত তেমনি সুন্দর দেখাচ্ছিল। ক্ষয়িতকলা চাঁদের মত উজ্জ্বল তার রূপ ব্যথাতুর লাবণো যেন গলে পড়ছে। করুণায় আমার বুকখানা দুলে উঠলো, চোখে উছলে উঠলো আকুল আত্মহারা প্রেম; সেও আমার দিকে চেয়ে অসহায় শিশুর হাত বাড়িয়ে কোলে আসবার মত করে হাসিটুকু হাসলো। তখন সামনে তার স্বামী, কিছু বলবার উপায় নেই। এই ভালবাসা আমাদের এক বছর চলেছিল। তার কোলে একটি ফুটন্ত পদ্মের মত মেয়ে এলো, সেই অনবদ্যা কিশোরী হলো মা! তারপর আমাদের প্রেম সকল বা ভেঙ্গে চললো অনিবার্য্য গতিতে সব ক্ষুইয়ে ফেলবার—সব কেড়ে নিবার দিকে; একদিন গভীর রাত্রে কামনার বশে অসহায় হয়ে আমরা দেহ

১৩২