পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

জগতে—লাল মাটির রাজ্যে। পাটনা কলেজের গেটের সামনে বাঁ দিকে রাতারাতি সাইনবোর্ড উঠলো—“B. Ghose's Stall,” দু’টি পাশাপাশি ঘর, একটি ছোট আর একটি লম্বায় বড়। বড় ঘরটিতে খান দুই আলমারীতে মাল সাজিয়ে একখানা তক্তপোষ ফেলে ছোট্ট টেবিল চেয়ার নিয়ে আমি চশমা চোখে বাবরী চুল মাথায় বসে গেলুম মনোহারী দোকান সাজিয়ে। মনোহারী দোকানের রকমারী রঙীন মালের চেয়ে দোকানীই বোধ হয় বেশী মনোহারী হয়ে উঠলো, কারণ আলাদীনের প্রদীপের রাতারাতি সৃষ্ট এই ক্ষুদে দোকানীকে দেখে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের সেখানে লেগে গেল ভিড়। আর কিছুতেই এই অকস্মাৎ নতুন দোকানীর টান ছাড়িয়ে চলে যেতে পারে না, লাজ লজ্জা কুল মান খুইয়ে সাবান পেন্সিলের দর যাচাবার অছিলায় পথ চলতে ঢুকে পড়ে আর ছুতায় নাতায় এই অভিনব অদ্ভুত কবি কবি দোকানীকে বেশ এক চোখ দেখে নেয়।

 ভিড় দেখে আমার মাথায় খেললো চায়ের দোকান দেবার মতলব। কলকেতায় মেসের নীচে য়্যাণ্ড্রু ইউলের চায়ের দোকান দেখে অবধি ঐ পোকাটি আমার মাথায় ছিল, খদ্দের জমাবার এ মন্দ ফিকির নয়, তার ওপর একটা নতুন কিছুও বটে। ভদ্রলোকের ছেলের চায়ের দোকান দেওয়া সেই-ই প্রথম। আজ যে চায়ের দোকান নানা দেশী বিদেশী চটকদার কাফে, ক্যাবিন, রেস্তোরাঁ, গ্রিল আদি নামে রাস্তার মোড়ে মোড়ে গজাচ্ছে আর মরছে তখনকার দিনে সে দিকে কারু মাথা তখনও

১৫৪