পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

তো ঐ রকম সৃষ্টিছাড়া লক্ষ্মীছাড়া বেদেমার্কা। সেজদার খানসামা তো আমায় দেখে অবাক! ‘ঘোষ সাহেবকা ভাই’ শুনেও বোধ হয় তার চটক ভাঙ্গল না, বিশ্বাস হ’লো না, নীচেই আমাকে বাহিরের ঘরে বসিয়ে রেখে সে চললো ওপরে খবর দিতে।

 সেজদা’ বেলা আটটা অবধি তখন ঘুমোতেন, তিনি সশব্যস্তে এসে “একি তুমি এখানে, এ ভাবে! শীগ্‌গির বাথরুমে যাও, কাপড় ছাড়ো, কাপড় ছাড়ো” বলে আমায় ঠেল্‌তে ঠেল্‌তে ওপরে চালান করে দিলেন, যাতে সেই উদ্‌ভ্রান্ত প্রেমিকের অবস্থায় খাসি রাও ও মাধব রাও-রা আমাকে দেখে না ফেলেন। সাবান ও তোয়ালের সাহায্যে চার দিন ও চার রাতের কয়লার গুঁড়ো এবং ধূলোর খোলসটি ত্যাগ করে সেজদার একটা সার্ট ও ও ফরসা ধুতি পরে বাবরি চুলটা রাবীন্দ্রিক কেতায় আঁচড়ে যখন বাইরে এলুম তখন সবাই কথঞ্চিৎ আশ্বস্ত, ক্রমে ক্রমে dining roomএ যাদব ভ্রাতার সঙ্গে দেখা। খাসি রাও “Well young man” ইত্যাদি সাহেবী সম্ভাষণে আমায় মাতব্বরী চালে পিঠ চাপ্‌ড়ে সম্বর্দ্ধনা করে নিলেন। মাধব রাও কোন দিনই ততখানি সাহেব হতে পারেন নি, বরোদা সেনা বিভাগের একটি রেজিমেণ্টের এডজুট্যাণ্ট এই শ্যামবর্ণ শান্তশ্রী দেখন-হাসি মানুষটী প্রথম দর্শনেই আমার বন্ধু হয়ে পড়্‌লেন, সেটা বলাই বাহুল্য।

 তারপর আরম্ভ হলো বরোদার নতুন জীবন যার সম্বল হ’লো কবিতা লেখা, নভেল পড়া, সব্জীবাগ আর শিকার। সেজদাকে

১৬৫