পাতা:আমার বাল্যকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আ মা র বা ল্য ক থা
২৭

দেখা যায় তাঁর শরীর অসুস্থ হইয়া পড়ে ও স্বাস্থ্যলাভ মানসে তিনি বোম্বাই নাসিক ইন্দোর উত্তর পশ্চিম প্রদেশে ভ্রমণে বাহির হন।

 কলিকাতা হতে বিদায় নিয়ে তিনি বিদেশ থেকে বন্ধুবান্ধবদের যে সকল পত্র লিখেছিলেন তা হতে তাঁর এই ভ্রমণবৃত্তান্ত আদ্যোপান্ত সমস্তটাই পাওয়া যায়—তাহা সংক্ষেপে এই:—

বোম্বাই, ১৩ই ডিসেম্বর ১৮৫৬

 তিনি সমুদ্র-পথ দিয়া বোম্বাই যাত্রা করেন। বোম্বাই পৌছিয়া Elephanta ও সালসেটের গুহামন্দির ও অন্যান্য হিন্দুকীর্তি দর্শন করিয়া তলঘাট পর্বতশ্রেণীর মধ্য দিয়া পিম্পলগামে উপনীত হন।

পিম্পলগাম, ১৩ই ডিসেম্বর ১৮৫৬

 “মারওয়াড় প্রদেশের মধ্য দিয়া চলিতেছি—এই দেশ রাজপুতবীর ও বীরঙ্গনাগণের রঙ্গভূমি। কিন্তু হায়! সে সব কীর্তি কোথায়? যাইতে যাইতে মনে হইতেছে, “Tis Greece but living Greece no more” গ্রীস বটে কিন্তু সে জীবন্ত ভাব তাহাতে নাই।

 পরে তথা হইতে নাসিক উত্তীর্ণ হইলাম, যাহা শিবাজীর অযোগ্য প্রতিনিধি বাজীরাওয়ের বাসস্থান। সঙ্গে কোন ভৃত্য নাই, বন্ধু নাই, মনে অশান্তি, শরীর অপটু এই অবস্থায় ডাঙ্গা পথ দিয়া সহস্র ক্রোশ নিরাপদে অতিক্রম করিতে পারিব এরূপ আশা করি নাই।”

মালেগাম, ২১এ ডিসেম্বর

 “চান্দোর দেখিলাম। অত্যুচ্চ পর্বত পরিবৃত মনোজ্ঞ দুর্গম স্থান। যে সকল প্রদেশ মরাঠী ও পিণ্ডারী যুদ্ধে ব্রিটিশ সৈন্যের গোলাগুলি বর্ষণে ক্ষতবিক্ষত হইয়াছে, তাহাদের মধ্যে ইহা অন্যতর, ইহার গাত্রে সেই ক্ষতচিহ্ন সকল অদ্যাপি বর্তমান। রাজবাটী (রঙ্গমহল) দর্শন করিলাম। ইহার ভিতর প্রথম হোলকারের গদী রক্ষিত আছে, একটি সামান্য কাঠের গদী, সেই অশ্বারোহী