পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অধ্যায়: এক
ঈশ্বর বিশ্বাস: কিছু বেয়াড়া আটপৌরে প্রশ্ন


করণ: এক

মাতৃস্নেহ, বন্ধু-প্রেমের মতই ঈশ্বর-প্রেমও কি একান্ত অনুভবের ব্যাপার?


বেশ কয়েক বছর আগে এক হেমামালিনী-প্রেমে পাগল যুবক আমাকে একান্তে ফিস্‌ফিস্ করে জানিয়েছিলেন, প্রেম হল অনুভবের বিষয়, অন্তর দিয়ে গভীর অনুভবের বিষয়। আমি আর হেমা দু’জনে যে দু'জনকে ভালবাসি, ভালবাসা কি চোখে দেখার, না ছুঁয়ে অনুভব করার? এই যে আমি এই মুহূর্তে আপনাকে আমাদের দুজনের প্রেমের কথা বললাম, অমনি হেমা কথাগুলো অনুভব করতে - পারল। আর পেরেই আমাকে লক্ষ্য করে শূন্যে চুমু ছুঁড়ে দিল। আপনি দেখতে পেলেন? না, ছুঁতে পেলেন? কিন্তু আমি পেলাম, অনুভবে পেলাম। মায়ের স্নেহ, বন্ধুর ভালবাসা হাত দিয়ে ছোঁয়া যায় না, দেখা যায় না। তবু তার বাস্তব অস্তিত্ব আছে। আমার-হেমার প্রেম সম্বন্ধেও এই একই কথা প্রযোজ্য।

 যুবকটিকে স্বাভাবিক ও সুস্থ চিন্তায় ফিরিয়ে আনতে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়েছিল। সঙ্গে ওকে বসিয়ে বেশ কয়েকটা সিটিং-এ বোঝাতে হয়েছিল—মায়ের স্নেহের বহিঃপ্রকাশ প্রতিটি দিনই নানাভাবে উৎসারিত হতেই থাকে। এই বহিঃপ্রকাশ কখনও পরিপাটি করে সাজিয়ে দেওয়া খাবারের থালায়, কখনও বা অসুস্থ কপালে রাখা হতে। বন্ধুর ভালবাসা কখনও আপনার অসুস্থ বাবার জন্য হাসপাতালের বারান্দায় সতর্কতার সঙ্গে রাত জাগে, আক্রমণ থেকে আপনাকে বাঁচাতে মাথা ফাটিয়ে আসে। হেমার ভালবাসা একটি বার, শুধু

১৩