পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১১৭ ]

পূর্ব্বক বলিলেন —মহাশয়! আমাকে এত বলিবেন না —আমি অতি ক্ষুদ্র ব্যক্তি —আমার জ্ঞান বা কি আর ধর্ম্মই বা কি। বেণী বাবু বলিলেন মহশয়েরা ক্ষান্ত হউন এ সকল কথা পরে হইবেক এক্ষণে কর্ত্তার পীড়ার জন্য কি বিধি তাহা বলুন। বরদা বাবু কহিলেন —আপনাদিগের মত হইলে আমি কলিকাতায় যাইয়া বৈকাল নাগাদ ডাক্তার আনিতে পারি, আমার বিবেচনায় ব্রজনাথ রায়ের ভরসায় থাকা আর কর্ত্তব্য নহে। প্রেমনারায়ণ মজুমদার নিকটে দাঁড়াইয়া ছিলেন —তিনি বলিলেন ডাক্তারেরা নাড়ির বিষয় ভাল বুঝে না,তাহারা মানুষকে ঘরে মারে, আর কবিরাজকে একেবারে বিদায় করা উচিত নহে বরং একটা রোগ ডাক্তার দেখুক —একটা রোগ কবিরাজ দেখুক। বেণী বাবু বলিলেন —সে বিবেচনা পরে হইবে এক্ষণে বরদা বাবু ডাক্তারকে আনিতে যাউন। বরদা বাবু স্নান আহার না করিয়া কলিকাতায় গমন করিলেন, সকলে বলিল বেলাটা অনেক হইয়াছে মহাশয় এক মুটা খেয়ে যাউন —তিনি উত্তর করিলেন —তা হইলে বিলম্ব হইবে, সকল কর্ম্ম ভণ্ডুল হইতে পারে।

 বাবুরাম বাবু বিছানায় পড়িয়া মতি কোথা মতি কোথা বলিয়া অনবরত জিজ্ঞাসা করিতেছেন কিন্তু মতিলালের চুলের টিকি দেখা ভার, তিনি আপন দল বল লইয়া বাগানে বনভোজনে মত্ত আছেন, বাপের পীড়ার সম্বাদ শুনেও শুনেন না। বেণী বাবু এই ব্যবহার দেখিয়া বাগানে তাহার নিকট লোক পাঠাইলেন কিন্তু মতিলাল মিছামছি বলিয়া পাঠাইলেন যে, আমার অতিশয় মাথা ধরিয়াছে কিছুকাল পরে বাটীতে যাইব।