পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১২৫ ]

মনে করিল এ কথা বড় ভাল— শ্রাদ্ধের পর আমিই বা খরচের টাকা কিরূপে পাই— এখন তো বাবা নাই যে চাহিলেই পাব এ কারণে উক্ত প্রস্তাবে সম্মত হইল।

 বাবুরাম বাবুর শ্রাদ্ধের ধুম লেগে গেল। ষোড়শ গড়িবার শব্দ —ভেঁয়ানের গন্ধ —বোল্‌তা মাছির ভন্‌ভনানি—ভিজে কাঠের ধুঁয়া—জিনিস পত্রের আমদানি— লোকের কোলাহলে বাড়ী ছেয়ে ফেলিল। যাবতীয় পূজরি, দোকানি ও বাজার সরকারে বামুণ এক২ তসর জোড় পরিয়া ও গঙ্গা মৃত্তিকার ফোঁটা করিয়া পত্রের জন্য গমনাগমন করিতে লাগল, আর তর্ক্কবাগীশ, বিদ্যারত্ন, ন্যায়ালঙ্কার, বাচস্পতি ও বিদ্যাসাগরের তো শেষ নাই, দিন রাত্রি ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ও অধ্যাপকের আগমন যেন গো মড়কে মুচির পার্ব্বণ।

 শ্রাদ্ধের দিবস উপস্থিত —সভায় নানা দিগ্‌দেশীয় ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের সমাগম হইয়াছে ও যাবতীয় আত্ম কুটুম্ব, স্বজন, সুহৃদ্‌ বসিয়াছেন —সম্মুখে রূপার দানসাগর —ঘোড়া, পাল্‌কি, পিতলের বাসন, বনাত, তৈজসপত্র ও নগদ টাকা —পার্শ্বে কীর্ত্তন হইতেছে —মধ্যে২ বেচারাম বাবু ভাবুক হইয়া ভাব গ্রহণ করিতেছেন। বাটীর বাহিরে অগ্রদানী, রেওভাট, নাগা, তষ্টিরাম ও কাঙালীতে পরিপূর্ণ। ঠকচাচা কেনিয়ে২ বেড়াচ্চেন —সভায় বসিতে তাঁহার ভর্সা হয় না। অধ্যাপকেরা নস্য লইতেছেন ও শাস্ত্রীয় কথা লইয়া পরস্পরে আলাপ করিতেছেন —তাঁহাদিগের গুণ এই যে একত্র হইলে ঠাণ্ডা রূপে কথোপকথন করা ভার —একটা না একটা উৎপাত অনায়াসে উপস্থিত হয়। একজন অধ্যাপক ন্যায়শাস্ত্রের একটা ফেঁড়কা উপস্থিত করিলেন— “ঘটত্বা বচ্ছিন্ন প্রতিযোগিতা ভাব বহ্ণি ভাবে ধূমা, ধূমাভাবে বহ্ণি”। উৎকলনিবাসী একজন পণ্ডিত কহিলেন —যৌটি ঘটিয়া বচ্ছিন্তি ভাব প্রতিযোগা সৌটি পর্ব্বত বহ্ণি নামেধিয়া। কাশীজোড়া নিবাসী পণ্ডিত বলি-