পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আলোর ফুলকি
৯১

তার সঙ্গে সেই গোলাবাড়িতেই আমি চিরদিন থাকব, আর কোনোদিন অভিমান করব না তার উপরে।” আমনি সোনালি দেখলে আলো হতে আরম্ভ হল, চারি দিকে পাখিরা গেয়ে উঠল, আকাশ ক্রমে নীল হতে থাকল, বনের ঘুম আস্তে আস্তে ভাঙতে লাগল।

 সোনালি মাটিতে মাথামুইয়ে বললে, “আলোর অপমান, আলোর দূতের অপমান আর আমি করব না। হে আলোর আলো, আমায় ক্ষমা করে, তাঁকে বাঁচাও” ‘দুম’ ক'রে ওধারে বন্দুক ছুটল, বনের সমস্তটা যেন রী-রী ক’রে শিউরে উঠল, তার পর কুঁকড়োর সাড়া এল, “আলোর ফুলকি।”

 “তাগ ফসকেছে। গুলি ফসকেছে।”—পেঁচাটা কেঁদে উঠল। আর অমনি দিকে দিকে পাখি সব “জয় জীব। জয় জীব।” বলে কুঁকড়োর জয় দিয়ে উঠল। কোকিল উলু উলু দিয়ে বলতে লাগল, “শুভদিন এল— শুভদিন।” দেখতে দেখতে চারি দিক আলোময় হয়ে উঠল। সেই সময় বনের মধ্যে পায়ের শব্দ উঠল। সোনালি চোখ বুজে চুপ করে শুনতে লাগল, পায়ের ধ্বনি আস্তে আস্তে তালে তালে পড়ছে এক, দুই, তিন। কার ঠাণ্ডা হাতের যেন পরশ পেয়ে সোনালি চোখ খুলে দেখলে, পলাতক। কুঁকড়োকে বুকের কাছে ধ’রে কুঁকড়োর মনিব। সোনালি পালাবার চেষ্টাও করলে না; কুঁকড়োর পাশে গেরেপ্তার হয়ে গোলাবাড়িতে চলল। বসন্ত বাউরি পাহাড়তলি মাতিয়ে সুর ধরলে, “কথা কও, বউ কথা কও, কোথা যাও। বউ কোথা যাও। কথা কও, বউ কথা কও।”