পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
আলোর ফুলকি

কোট সাদা-কামিজে ফিটফাট কাক দরজায় দাড়িয়ে মোড়লি ক’রে এর-ওর-তার আলাপ-পরিচয় ক’রে বেড়াচ্ছেন– ইনি রাজহংস, ইনি হংসেশ্বরী, তুরস্কের পেরু, ও-পাড়ার চটসাই চড়াইমশায় ইনি আমাদের। সোনালি চড়াইকে ধুলোমাখা, কেমন হতভাগা-গোছের চেহারায় আসছে দেখে শুধলেন, “কোনো অমুখ হয় নি তো।” চড়াই সোনালিকে ফুলের টবের ইতিহাস বলতে সোনালি হেসেই অস্থির। সোনালি আর চড়ায়ে কথা হচ্ছে, এমন সময় আরো পাখি আসতে লাগল। ভিড় দেখে সোনালি চড়াইকে নিয়ে একটা জলের বোমার আড়ালে সরে দাড়ালেন। সেই সময় জিম্ম কাছেই একটা ভাঙা ঠেলাগাড়িতে লাফিয়ে বসল, সোনালি তাকে দেখে একবার ঘাড় হেলিয়ে নমস্কার করলেন, দূর থেকেই।

 জিম্মার চেহারাটা কেমন রাগি-রাগি বোধ হল। ঘোটের খবর যেমন শোনা অমনি সে কুঁকড়োকে বিপদ থেকে বাচাতে শিকলিটা ছিড়ে টানতে টানতে এসে উপস্থিত কুলতলায়। চড়াইকে বোমার পিছনে দেখে জিম্মী রাগে গো-গো করতে লাগল। ভয় পেয়ে চড়ায়ের লেজ কাপতে লেগেছে, এমন সময় ফড়িংদের স্ট্রিংব্যাণ্ড শুরু হল, সেইসঙ্গে গঙ্গা-মৃত্তিকার অলকা-তিলকা দিয়ে ছাপমারা গঙ্গাফড়িং কীর্তন ধরলেন– তুড়ি রাগিণীতে খোল বাজিয়ে সূর্যের রূপবর্ণনা –

কনক বরন, কিয়ে দরশন
নিছনি দিয়ে যে তার।
কপালে ললিত চাদ শোভিত
সিন্দুর অরুণ আর
আহা কিবা সে মধুর রূপ।

দু-একজন বিলেত-ফেরত মোরগ, খোল শুনে দশা পেলেন।

 তার পর মৌমাছি গাইতে লাগল দলে দলে ‘মধুর গান—

আলোতে চলি সবাই গুনগুনিয়ে,
আলোতে ফুল ফুটেছে তাই শুনিয়ে,
গুন-গুনিয়ে।