পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৩৫

অযোধ্যাকাণ্ড


বয়স হইল ষাট হাজার বস্ত্র,
চলিতে কাঁপেন রাজা করি থর্-থর।
ভাবিলেন তাই, ‘মোর বল গেছে টুটি,
রামেরে বুঝায়ে কাজ আমি লই ছুটি।’
তখন বলেন রাজা, “শুন সভাজন,
যুবরাজ কর মোর রামেরে এখন।”
শুনিয়া সুখেতে সবে করে কোলাহল,
আনন্দে কৌশল্যা মার চোখে এল জল।
পুরোহিত মহামুনি বশিষ্ঠ তখন,
যতনেতে করিলেন যত আয়োজন।
সুন্দর বসন পরি সাজিল সকলে,
আনন্দে ধুইল মুখ চন্দনের জলে।
মনের সুখেতে তারা করে গণ্ডগোল,
‘ডিম্বি-ডিম্বি’ ‘তাই-তাই’ বাজে ঢাক ঢোল।
কৌশল্যা দেবীর স্নান হয়েছে কখন,
হরিনাম করে মাতা হয়ে এক মন।
কৈকেয়ার ছিল এক আদরের দাসী,
বিষমুখী হতভাগী কুঁজী সর্বনাশী।
মন্থরা নামটি তার, লোকে কয় ‘কুঁজী’,
কার মেয়ে, কোথা ঘর নাহি পাই খুঁজি।
কুঁজী বলে, “হ্যাঁ গা, এত কিসের বাজনা?”
রামের ধাই-মা কয়, “তাও কি জানো না?
যুবরাজ হবে আজি আমাদের রাম,
তাই এত বাদ্য আর এত ধুমধাম!”
এই কথা ধাই তারে কহিল যখন,
হিংসায় কুঁজীর কুঁজ করে টনটন!
কৈকেয়ীর কাছে গিয়া তখনি সে কয়,
“শোনো, শোনো! আজি রাম যুববাজ হয়!”
রাণীর মনে বড় সুখ হল তায়,
খুলিয়া গলার হার দিল মন্থরায়।
দূরে ফেলি সেই হার কহে দুষ্ট কুঁজী,
“ভালো মন্দ কিসে হয়, নাহি জানো বুঝি!
কুটিল কৌশল্যা রাণী রাজার মা হলে,
হেঁট মুখে রবে তুমি তার পদতলে।