ফুলে ওঠে হনুমান মনে ভয় পেয়ে
সুরসা হাঁ করে ঢের বড় তার চেয়ে!
ফুলে-ফুলে হয় হনু নব্বুই যোজন,
হাঁ করে যোজন শত সুরসা তখন।
হনু বলে, “তাই তো রে, গিলিবেই নাকি?
সে হবে না ঠাকরুণ—হনু জানে ফাঁকি।”
শরীর গুটায়ে হনু লইল তখন,
পলকে হইল তেলাপোকার মতন।
ঝাঁ করে ঢুকিল গিয়া সুরসার মুখে,
তখনি বাহির হয়ে পলাইল সুখে।
ঠকিয়া সুরসা হাসি ফ্যাল্-ফ্যাল্ চায়,
কোথা দিয়ে গেল হনু ভাবিয়া না পায়।
ডাকিয়া কহিল তারে, “যাও বাছাধন
সুখেতে নিজের কাজ কর গে এখন।”
বলিয়া সুরসা যায় আপনার দেশে
আকাশে ছুটিয়া হনু যায় হেসে-হেসে।
সিংহিকা রাক্ষসী এল সুরসার পরে,
মুখ মোলি হনুমানে গিলিবার তরে।
হনু বলে, “বুড়ি তুই ভালো ভোজ খাবি,
অসুখ না হয় পরে, তাই শুধু ভাবি।”
ছোট হয়ে গেল হনু রাক্ষসীর পেটে,
নাড়ি ভুঁড়ি সব তার নখে দিল কেটে।
হাঁ করে রাক্ষসী মরে, হাসে দেবগণ,
আকাশে ছুটিয়া হনু যায় ততক্ষণ।
লঙ্কার সোনার পুরী দেখে তারপরে,
ঝলমল করে তাহা জলের উপরে।
হনু ভাবে, ‘বড় হয়ে যদি সেথা যাই,
রাক্ষসে করিবে দেখি ভারি কাঁই-মাঁই।’
খুব ছোট হয়ে তাই, পাখির সমান,
ত্রিকূট পর্বতে গিয়া নামে হনুমান।
লুকায়ে রহিল বনে দিনের বেলায়,
আঁধার হইলে গেল খুঁজিতে সীতায়।
চুপিচুপি যায় হনু, ছোট হয়ে ভারি,
বিকট রাক্ষসী তায় দেখে এল তাড়ি।
গালি দিল দুশো দাঁত করি কড়্মড়্,
পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৫৭