পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৯২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২৮
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

সময় তক্তাখানা সরাইতে হয়, তবেই আলোটা দেখা যায়। তক্তা সরাইয়া অল্পক্ষণ রাখিলে একপ্রকার সংকেত আর অধিকক্ষণ রাখিলে অন্যপ্রকার সংকেত বুঝায়।

 সংকেতের কথা আমরা শেষ করিলাম। টেলিগ্রাফে যে সংকেত ব্যবহার করা হয় তন্মধ্যে মর্স সাহেবের সংকেত-প্রণালীই অধিক প্রচলিত। মর্সের টেলিগ্রাফের সংকেত এই প্রণালীতে করা হয়—মর্সের টেলিগ্রাফে টাক্ টিক্‌ করিয়া শব্দ হয়, তাহার হ্রস্বতা ও দীর্ঘতা অনুসারে দুই প্রকারের সংকেত হইতে পারে। শেষে যতপ্রকার সংকেতের কথা বলা হইল, সবগুলিই কেবল হ্রস্ব দীর্ঘ লইয়া হইয়াছে। শব্দ কি আলোক অধিকক্ষণ থাকিলে তাহা দীর্ঘ, তাহার চিহ্ন (—) এইরূপ। অল্পক্ষণ থাকিলে তাহা হ্রস্ব, চিহ্ন (-) এইরূপ।


মূল বর্ণ

 রামধনু বিষয়ক একটি প্রস্তাব গত বর্ষের সখায় লেখা হইয়াছিল তাহাতে এক জায়গায় লেখা ছিল যে, লাল সবুজ আর ভায়োলেট এই তিনটি মূল বর্ণ আব অন্য কযেকটি বর্ণ ইহাদের হইতে উৎপন্ন। লাল, নীল এবং পীত এই তিনটি মূল বর্ণ, এইরূপ বিশ্বাসই সাধারণে প্রচলিত; সুতরাং আমাদের চিঠিও পাইয়াছি। চিঠিখানি পডিয়া আমরা অতিশয সন্তুষ্ট হইয়াছি এবং আহ্বাদের সহিত এ বিষয়ে আমবা যাহা জানি, পত্রলেখকের সন্দেহ দুব করিবার জন্য তাহা লিখিতেছি।

 প্রথমে অবাস্তর কথা দু-একটি বলা আবশ্যক হইয়াছে। এ বিষযটি ভালো কবিয়া বুঝিতে হইলে সখার এই প্রবন্ধে কুলাইবে না। কিন্তু কিছু একটু বুঝাইতে চেষ্টা করার পূর্বেও আলোক সম্বন্ধে কিছু বলা আবশ্যক। আলোক আছে বলিয়াই আমরা জিনিসের বঙ দেখিতে পাই। রঙটা বাস্তবিক জিনিসের নয়, রঙটা আলোকের। জিনিসটা কিছু আমাদের চক্ষে আসিয়া পড়ে না; আমরা যে সকল জিনিস দেখি, সেগুলি যদি আমাদের চক্ষে আসিয়া পড়ার দরকার হইত, তবে এতদিনে অন্ধ হইয়া যাইত ম! জিনিস হইতে আলো আসিয়া আমাদের চক্ষে পড়ে। সেই আলোকের যে রঙ জিনিসটারও সেই রঙ দেখা যায়। জিনিস হইতে আলোক দুই প্রকারে আসিয়া আমাদের চক্ষে পডিতে পারে। এক জিনিসটার ভিতর দিয়া আসিতে পারে, আর তাহার গায়ে পড়িয়া উলটিয়া আসিয়া আমাদের চক্ষে পড়িতে পারে। আর এক কথা, ভিতর দিয়াই আসুক, উলটিয়াই আসুক, জিনিসে যত প্রকারের আলো পড়ে, সাধারণত তাহার সকলগুলি আমাদের চক্ষে আসিতে পারে না। আলো পড়িবামাত্র জিনিসটা তাহার কিছুটা খাইয়া ফেলে, বাকি আমাদের কাছে আসিতে দেয়। কোনো জিনিস লাল আলো ছাড়া আর সকল রঙের আলো খাইয়া ফেলে, তাহাকে লাল দেখা যায়; যে জিনিস সবুজ ছাড়া আর সব আলো খায়, তাহাকে সবুজ দেখা যায়। সে জিনিস সকল প্রকারের আলোই খায়, তাহাকে কালো দেখা যায়। যে জিনিস কোনো প্রকারের আলোই খাইতে জানে না, সে সাদা। জিনিসে যত আলো পড়ে, তাহার সব যদি সে খাইয়া ফেলে, তবে তাহাকে কালো দেখাইবে। সবুজ জিনিসে সবুজ ছাড়া আর যেরূপ