পাতা:ঔপনিষদ ব্রহ্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঔপনিষদ ব্রহ্ম
২৭

কোন্ মূঢ় বিশ্বাস করিবে যে, মন্ত্রোচ্চারণে লোহা সোনা হইয়া যাইবে, খণি অন্বেষণের প্রয়োজন নাই? উত্তিষ্ঠত, জাগ্রত! দুর্গং পথস্তৎ কবয়ো বদন্তি!

 তবে ব্রহ্মলাভের চেষ্টা কি একেবারে পরিত্যাগ করিতে হইবে? তবে কি এই কথা বলিয়া মনকে বুঝাইতে হইবে যে, যাঁহারা সংসার ত্যাগ করিয়া অরণ্য আশ্রয় গ্রহণ করেন, যাঁহাদের নিকট ভালমন্দ সুন্দর কুৎসিত অন্তর বাহিরের ভেদ একেবারে ঘুচিয়া গেছে ব্রহ্মজ্ঞান ব্রহ্মোপাসনা তাঁহাদেরই জন্য? তাই যদি হইবে তবে ব্রহ্মবাদী ঋষি ব্রহ্মচারী ব্রহ্মজিজ্ঞাসু শিষ্যকে কেন অনুশাসন করিতেছেন প্রজাতন্তুং মা ব্যবচ্ছেৎসীঃ, সন্তানসূত্র ছেদন করিবে না, অর্থাৎ গৃহাশ্রমে প্রবেশ করিবে। কেন শাস্ত্রকার বিশেষ করিয়া উপদেশ দিতেছেন, ব্রহ্মনিষ্ঠো গৃহস্থঃ স্যাৎ, গৃহস্থ ব্যক্তি ব্রহ্মনিষ্ঠ হইবেন; এবং তত্বজ্ঞান পরায়ণঃ, তত্ত্বজ্ঞানী হইবেন, অর্থাৎ যে নিষ্ঠার কথা কহিলেন তাহা যেন অজ্ঞান-নিষ্ঠা না হয়, গৃহী যথার্থ জ্ঞান পূর্ব্বক ব্রহ্মে নিরত হইবেন, এবং যদ্যদ্ কর্ম্ম প্রকুর্ব্বীত তন্ত্রহ্মণি সমর্পয়েৎ যে যে কর্ম্ম করিবেন তাহা ব্রহ্মে সমর্পণ করিবেন;—অতএব শাস্ত্রের অনুশাসন এই যে, গৃহী ব্যক্তিকে কেবল ভক্তিতে নহে, জ্ঞানে, কেবল জ্ঞানে নহে, কর্ম্মে, হৃদয়ে মনে এবং চেষ্টায় সর্ব্বতোভাবে ব্রহ্মপরায়ণ হইতে হইবে। অতএব সংসারের মধ্যে থাকিয়া আমরা সর্ব্বদা সর্ব্বত্র ব্রহ্মের