পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮
কথা-চতুষ্টয়।

চলিয়া গেল, একবার মুহুর্ত্তের তরে ভাবিলও না হরসুন্দরী তাহাকে কতখানি দিল। সে জানিল চতুর্দ্দিক হইতে সমস্ত সেবা, সমস্ত সম্পদ, সমস্ত সৌভাগ্য স্বাভাবিক নিয়মে তাহার মধ্যে আসিয়া পরিসমাপ্ত হইবে, কারণ, সে হইল শৈলবালা, সে হইল সই!


পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

এক এক জন লোক স্বপ্নাবস্থায় নির্ভীক ভাবে অত্যন্ত সঙ্কটের পথ দিয়া চলিয়া যায়, মুহূর্ত্তমাত্র চিন্তা করে না। অনেক জাগ্রত মানুষেরও তেমনি চির-স্বপ্নাবস্থা উপস্থিত হয়, কিছুমাত্র জ্ঞান থাকে না, বিপদের সঙ্কীর্ণ পথ দিয়া নিশ্চিন্ত মনে অগ্রসর হইতে থাকে, অবশেষে নিদারুণ সর্ব্বনাশের মধ্যে গিয়া জাগ্রত হইয়া উঠে!

 আমাদের ম্যাক্‌মোরান্‌ কোম্পানির হেড্‌ বাবুটিরও সেই দশা। শৈলবালা তাহার জীবনের মাঝখানে একটা প্রবল আবর্ত্তের মত ঘুরিতে লাগিল, এবং বহুদূর হইতে বিবিধ মহার্ঘ পদার্থ আকৃষ্ট হইয়া তাহার মধ্যে বিলুপ্ত হইতে লাগিল। কেবল যে নিবারণের মনুষ্যত্ব এবং মাসিক বেতন, হরসুন্দরীর সুখসৌভাগ্য এবং বসনভূষণ, তাহা নহে; সঙ্গে সঙ্গে ম্যাক্‌মোরান্‌ কোম্পানির ক্যাশ তহবিলেও গোপনে টান পড়িল।