পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুনরালাপে।
১৪১

পতনমাত্র মুর্চ্ছিত হইয়াছিলাম। প্রথমে অবিচ্ছেদে অজ্ঞানাবস্থায় ছিলাম। পরে ক্ষণে জ্ঞান, ক্ষণে অজ্ঞান রহিলাম। কয় দিন যে আমি এ অবস্থায় রহিলাম তাহা বলিতে পারি না। বোধ হয় দুই রাত্রি এক দিন হইবে। প্রভাত কালে আমার সংজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে পুনরাবির্ভূত হইল। তাহার অব্যবহিত পূর্ব্বেই আমি এক স্বপ্ন দেখিতেছিলাম। যেন ভবানী” বলিতে বলিতে কাপালিকের শরীর রোমাঞ্চিত হইল। “যেন ভবানী আসিয়া আমার প্রত্যক্ষীভূত হইয়াছেন। ভ্রূকুটি করিয়া আমায় তাড়না করিতেছেন; কহিতেছেন “রে দুরাচার, তোরই চিত্তাশুদ্ধি হেতু আমার পূজার এ বিঘ্ন জন্মাইয়াছে। তুই এপর্য্যন্ত ইন্দ্রিয়লালসায় বদ্ধ হইয়া এই কুমারীর শোণিতে এত দিন আমার পূজা করিস নাই। অতএব এই কুমারী হইতেই তোর পূর্ব্বকৃত্য ফল বিনষ্ট হইল। আমি তোর নিকট আর কখন পূজা গ্রহণ করিব না।” তখন আমি রোদন করিয়া জননীর চরণে অবলুণ্ঠিত হইলে তিনি প্রসন্ন হইয়া কহিলেন “ভদ্র! ইহার একমাত্র প্রায়শ্চিত্ত বিধান করিব। সেই কপালকুণ্ডলাকে আমার নিকট বলি দিবা। যত দিন না পার আমার পূজা করিও না।”

 কতদিনে বা কি প্রকারে আমি আরোগ্য প্রাপ্ত হইলাম তাহা আমার বর্ণিত করিবার প্রয়োজন নাই। কালে আরোগ্য পাইয়া দেবীর আজ্ঞা পালন করিবার চেষ্টা আরম্ভ করিলাম। দেখিলাম যে এই বাহুদ্বয়ে শিশুর