পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
কলিকাতার ইতিহাস।

সহায়তায় ভাগীরথীর উভয়-পার্শ্বস্থ আরও ৩৭।৩৮ খানি গ্রাম ইংরেজরা লাভ করিয়াছিলেন। বস্তুতঃ ইহা বড়ই আনন্দের বিষয় যে, চিকিৎসকদিগের চিকিৎসা-নৈপুণ্যের গুণেই ইংরেজরা প্রকৃতপক্ষে ভারতে দাঁড়াইবার স্থান লাভ করিতে পারিয়াছিলেন। ডাক্তার বাউটন[১] কর্ত্তৃক সম্রাট শাহ জাহাঁর কন্যার চিকিৎসা সফলতা ও হ্যামিল্টন কর্ত্তৃক সম্রাট ফরকসিয়ারের অস্ত্রচিকিৎসা যে নীতি শিক্ষা দিতেছে, তাহা উপেক্ষা করিবার নহে।

 বাঙ্গালার শাসনকর্ত্তা নবাব জাফর খাঁ ইংরেজদিগের প্রতি অত্যন্ত বিরূপ এবং তাঁহাদের স্বার্থসাধনের নিতান্ত প্রতিকূল ছিলেন। সম্রাট ঔরঙ্গজেব ইংরেজদিগকে যে সকল অধিকার প্রদান করিয়াছিলেন, জাফর খাঁ প্রকাশ্যে তাহার কোনরূপ বিরুদ্ধাচরণ না করিয়া তাঁহাদিগকে কষ্ট দিবার নিমিত্ত নানাপ্রকার কূট কৌশল অবলম্বন করিতে লাগিলেন। কোম্পানী শীঘ্রই দেখিলেন যে, এতদ্দেশে তাঁহাদের অবস্থা বড় সুবিধাজনক নহে। অবশেষে ১৭১৩ অব্দে তাঁহারা দিল্লীতে মোগল রাজসভায় আবেদন সহ দূত প্রেরণ করাই পরামর্শাসিদ্ধ বলিয়া স্থির করিলেন। তৎকালে হজেস


  1. ১৬৪৫ অব্দে সম্রাট শাহজাহাঁ তাঁহার প্রিয়তমা তনয়ার চিকিৎসার নিমিত্ত হোপ হল নামক জাহাজের ডাক্তার গ্যাব্রিয়েল বাউটনকে লইয়া যান এবং তাঁহার চিকিৎসায় রাজকুমারী আরোগ্য লাভ করিলে, সম্রাট কোম্পানীকে বহু সুবিধাজনক অধিকার প্রদান করেন। আবার ১৬৪৬ সালে বাঙ্গালার সুবাদারও বাউটন সাহেবের দ্বারা চিকিৎসিত হন। এই সকল মহোপকার সাধনের ফলে ইংরেজদিগের বালেশ্বর ও হুগলীর কুঠিগুলি অনেকটা বিঘ্নশূন্য হইয়া উঠে। এস্থহে বলা আবশ্যক যে, হুগলির কুঠি ১৬৪০ অব্দে এবং বালেশ্বরের কুঠি ১৬৪২ অব্দে নির্ম্মিত হইয়াছিল।