পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪২
কলিকাতার ইতিহাস

উহাদের নামকরণ ইয়াছে, কিন্তু সাধারণভাবে উহারা 'স্মৃতি' নামে পরিচিত।

 কখন কি ভাবে জাতিভেঙ্গ প্রথম প্রচলিত হইঘাছে, তাহা নির্ণয় করিবার উপায় নাই।[১] হিন্দুধর্ম্ম-কর্ম্মসাধন বিষয়ে বর্ণাশ্রম ধর্ম্ম নামে অভিহিত। শ্রীযুক্ত এন, এন, ঘোৰ লিখিয়াছেন;—“হিন্দুজাতির প্রথম চারি শ্রেণী বিভাগের সময় ব্যবসায়ের বিভিন্নতা অপেক্ষা নৈতিকপ্রকৃতির বিভিন্নতার উপরই অধিক নির্ভর করা হইয়াছিল। জাতিভেদের বাহ্যভাব দেখিলে, ব্যবসায় ভেদই ইহার মুল বলিয় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতি ও চরিত্রের ভিন্নতাই ইহার মুল। বিভিন্ন জাতির ভেদসূচক রেখা অতীব দৃঢ়তার সহিত নির্ধারিত হইয়াছে। পিতার জাতিই পুত্রের জাতি। পুরাকালে যখন হিন্দু রাজারা রাজত্ব করিতেন, এবং ঋষিরা বিধিপ্রণয়ন ও প্রয়োগ করিতেন, এস সময়ে যাহাই ঘটিয়া থাকুক না কেন, ইহা নিশ্চিত যে, আজি কেহই এক জাতি হইতে অন্য জাতিতে নীত হইতে পারে না, বা কেহ স্বয়ং ইচ্ছা বা চেষ্টা করিয়া এক জাতি হইতে অন্য জাতিতে যাইতে পারে না। হিন্দুরা মনে করে, মানুষের জাতি তাহার পূর্ব্বজন্মকৃত কর্ম্মের অবশ্যম্ভাবী ফল, এবং তাদের বিশ্বাস এই যে, মানুষ ইহজন্মে যে ভাবে জীবন যাপন করিবে, তদনুসারে পরজন্মে তার জাতি নির্দ্ধারিত হইবে। জাতিভেদই হিন্দু-সমাজনীতির মুল।

  1. ঋগ্বেদে জাতিভেদপ্রণালীর উল্লেখ আছে। পাশ্চাত পণ্ডিতগণ স্থির করিয়াছেন, খ্রীষ্টের জন্মের ৩০০০ বৎসর পূর্ব্বে ঋগ্বেদ রচিত হইয়াছিল। কিন্তু হিন্দুরা বলেন, ইহা অনাদিকাল হইতে চলিয়া আসিতেছে।