হয়। মার্হাট্টারা উহার নিকটেই চতুর্দ্দিকে ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল এবং থানা দুর্গ অধিকার করিল। উক্ত দুর্গ যে স্থানে অবস্থিত ছিল, সেই স্থানে এক্ষণে রাজকীয় ঔদ্ভিদ্ উদ্যানের মধ্যস্থ ডাক্তার আণ্ডার্সনের গৃহ দণ্ডায়মান। উত্তরপাড়ায় অদ্যাপি এমন অনেক প্রাচীন লোক আছেন, যাঁহার। তাঁহাদের পিতা, পিতামহ, প্রভৃতির নিকট শুনিয়াছেন যে, মার্হাট্টা বর্গীর দৃষ্টি পরিহার করিবার নিমিত্ত স্ত্রীলোকেরা কলসী মাথায় করিয়া পুষ্করিণীর জলে আত্মগোপন করিত। “বর্গীর হাঙ্গামা” কথাটী এখনও একটী প্রবাদবাক্য হইয়া রহিয়াছে এবং সে কালের সেই ভীষণ দৌরাত্ম্যের কথা স্মৃতিপথে জাগরুক করিয়া রাখিয়াছে। এতদ্দেশে দাসব্যবসায় বহুকাল হইতে প্রচলিত ছিল। কলিকাতা ও তৎসন্নিহিত অঞ্চলে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত দাসব্যবসায়ের চিহ্ন বিদ্যমান ছিল। ওলন্দাজ, ফরাসী, ইংরেজ, পর্ত্তুগীজ, হিন্দু, মুসলমান সকলেই এই প্রথার পক্ষপাতী ছিল। এক্ষণে দাসব্যবসায় সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হইয়াছে। পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ ও আমেরিকা অপেক্ষা বঙ্গের দাসগণের অবস্থা অপেক্ষাকৃত অনেকাংশে ভাল ছিল।
মুসলমান রাজত্বকালে কেবল কলিকাতা কেন, সমস্ত বঙ্গদেশই অতীব অস্বাস্থ্যকর স্থান বলিয়া বিবেচিত হইত। গ্লাডুরিয়া সাহেব স্বপ্রণীত বঙ্গদেশের বিবরণীতে এ সম্বন্ধে মুসলমানদিগের অভিপ্রায় এইরূপ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন:
“পূর্ব্ব পূর্ব্ব রাজাদিগের রাজত্বকালে জলবায়ুর অপকৃষ্টতানিবন্ধন বঙ্গদেশ মোগল ও অন্যান্য বৈদেশিকগণের স্বাস্থ্যের প্রতিকূল স্বরূপে বিবেচিত হইত; সেই জন্য যে সকল কর্মচারী রাজার বিরাগভাজন হইত, তাহারাই বঙ্গদেশে প্রেরিত হইত। সুতরাং