পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়।
৯১

 যেস্থান বৈঠকখানা ষ্ট্রীট নামে খ্যাত ছিল, তাহা এক্ষণে বৌবাজার ও বৈঠকখানা ষ্ট্রীট দ্বারা অবিকৃত। ঐ স্থানে একটা অতি প্রাচীন প্রসিদ্ধ বৃক্ষ ছিল; যে সকল বণিক বাণিজ্যার্থে কলিকাতায় আসিত, তাহারা ঐ বৃক্ষটীকে বৈঠকখানারূপে ব্যবহার করিত, অর্থাৎ ঐ গাছতলায় পণ্য দ্রব্যাদি নামাইয়া বিশ্রামলাভ কবিত; তাহা হইতেই স্থানটার ঐরূপ নামকরণ হইয়াছে। মাণিক নামক মুসলমানপীরের নাম হইতে মাণিকতলা, নাম হইয়াছে। বিবি কাউণ্টেস্ অব লাউডনের নামানুসারে লাউডন স্ত্রী, জষ্টিস্ রসেল সাহেবের নামানুসারে রসেল, ষ্ট্রীট, এবং পর্তুগীজ বণিক জোসেফ ব্যারোটার নামানুসারে ব্যারেটো ষ্ট্রীট নাম হইয়াছে। হলওয়েল সাহেব ১৭৫২ অব্দে যে বিবরণী লিপিবদ্ধ করেন, তাহাতে ধোপাপাড়া, বেলেপুকুর, ট্যাংরা প্রভৃতির নামোল্লেখ আছে।

 কলিকাতার কোন কোন অংশের নাম স্থানীয় অধিবাসীদিগের বৃত্তিব্যবসাসের নামানুসারে হইয়াছে; যেমন কুম্ভকার হইতে কুমার টুলি, মদ্যবিক্রেতা শৌণ্ডিক হইতে শুণ্ডিপাড়া, কাংস্যকার হইতে কাঁঁসারিপাড়া, সূত্রধর হইতে ছুতারপাড়া, জালজীবী হইতে জেলে পাড়া, ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সকল লোক যে ভিন্ন ভিন্ন বৃত্তি ব্যবহারেরই পরিচালনা করিত তাহা নহে, প্রত্যুত তাহাদের জাতিও ভিন্ন ভিন্ন ছিল, এবং তাহাদের জাতীয় ও সামাজিক আচারব্যবহার তাহাদের বাসস্থানের চতুর্দ্দিকে পরিস্ফুট হইয়া পড়িত। আজকালি কিন্তু সকল বিষয়ই পর পর এমন দ্রুতগতিতে খটিয়া যায় এবং লোকেরা এত অধিকসংখ্যক বিষয়ে ব্যাপৃত থাকে যে, কেহই স্বজাতীয়দিগকে লইয়া সভাসমিতি করিবার কথা ভাবির অবসর