পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অঙ্কার্পিতসুতাং ষষ্ঠী-মম্বুজস্থাং বিচিন্তয়েৎ।।

 আজি চূর্ণ করিব তাহার অহঙ্কার।
 সাক্ষাতে দেখিবে চল তুমি আপনার।।
 সে সকল কথন হইল পাসরণ।
 গোকুলেতে ইন্দ্রে দূর করিনু যখন।।
 সাত দিন কৈল যত ছিল পরাক্রম।
 নহিলেক গোপকুলে পূজা লৈতে ক্ষম।।
 এত অহঙ্কার তার সুরপুরে স্থিতি।
 উচ্চকুলে নিবাস অমরাবতী খ্যাতি।।
 আর অহঙ্কার চড়ে ঐরাবতোপরে।
 আর অহঙ্কার বজ্র অস্ত্র ধরে করে।।
 আর অহঙ্কার তার সহস্রলোচন।
 মত্ততা তাহার দূর করিব এখন।।
 সুরপুর হইতে পাড়িব ভূমিতলে।
 প্রহারে ভাঙ্গিব গজরাজ-কুম্ভস্থলে।।
 অব্যর্থ মুনির অস্থি সেই তার বাজ।
 ব্যর্থ করি হাসাইব দেবের সমাজ।।
 ভাঙ্গি বন সমূলে আনিব পারিজাত।
 দেখি রক্ষা কেমনে করিবে শচীনাথ।।
 এত বলি গোবিন্দ স্মরেন খগেশ্বরে।
 অগ্রে দাঁড়াইল খগরাজ যোড়করে।।
 শ্রীকৃষ্ণ বলেন যাব ইন্দ্রের নগর।
 আনিব হেথায় পারিজাত তরুবর।।
 গরুড় বলিল প্রভু তুমি যাও কেনে।
 আজ্ঞা দিলে আমি যাই ইন্দ্রের ভবনে।।
 নন্দন বনের সহ ফুল পারিজাত।
 এইক্ষণে হেথা আনি দিব জগন্নাথ।।
 গোবিন্দ বলেন সব সম্ভব তোমাতে।
 কিন্তু আমি তারে লঘু করিব সাক্ষাতে।।
 এত বলি গোবিন্দ নিলেন প্রহরণ।
 কৌমদকী গদা খড়গ চক্র সুদর্শন।।
 ধরিয়া সারঙ্গ ধনু চড়াইয়া গুণ।
 অর্পিলেন গরুড়ে অক্ষয় যার তূণ।।
 বেশভূষা করিলেন কিরীট কুণ্ডল।
 মেঘেতে শোভিল যেন মিহিরমণ্ডল।।
 কণ্ঠেতে ভূষোন গজমুকুতার হার।
 ঝিকিমিকি করে যেন বিদ্যুৎ আকার।।
 বক্ষঃস্থলে রত্নরাজ শোভিত কৈস্তভ।
 দেখিয়া মুর্চ্ছিত হয় কোটি মনোভব।।
 অঙ্গদ বলয় আর কেয়ুর ভূষণ।
 আঁটিয়া পরেন পীতবরণ বসন।।
 সর্ব্বাঙ্গে লেপন কৈল চন্দন কস্তুরী।
 কাঁকালেতে বন্ধন করেন খড়গ ছূরি।।
 হইলেন গরুড়ে আরূঢ় জগন্নাথ।
 সত্যভামা বলেন যাইব আমি সাথ।।
 দেখিব ইন্দ্রের পুরী কেমন ইন্দ্রানী।
 কিরূপে তোমার সহ যুঝে বজ্রপাণি।।
 শুনি হরি তাঁরে বসাইলেন যে বামে।
 আনিলেন ডাকিয়া সাত্যকি আর কামে।।
 দোঁহারে বলেন কৃষ্ণ চল মম সঙ্গ।
 ইন্দ্র সহ সমর দেখহ আজি রঙ্গ।।
 কৃষ্ণাজ্ঞা পাইয়া খগে করি আরোহণ।
 চলিলেন সমর দেখিতে চারিজন।।
 হেনকালে বলভদ্র প্রভৃতি যাদব।
 বলিল তোমার সহ যাব মোরা সব।।
 গোবিন্দ বলেন থাক দ্বারকা রক্ষণে।
 শূন্য জানি আসি কি করিবে দুষ্টগণে।।
 এত বলি প্রবোধিয়া সবারে রাখিয়া।
 গরুড়ে দিলেন আজ্ঞা চলহ বলিয়া।।
 মহাভারতের কথা অমৃত-সমান।
 কাশীরাম দাস কহে শুনে পুন্যবান্।।
      ------
   শ্রীকৃষ্ণের ইন্দ্রালয়ে গমন।
   নারদ বলিল তবে শুন নারায়ণ।
 অদিতি কহিল যত কুণ্ডল কারণ।।
 নরক আনিল বলে অদিতি কুণ্ডল।
 লুটিয়া অমরাবতী অমরী সকল।।
 পৃথিবীর পুত্র হয় নরক দুর্ম্মতি।
 তারে না মারিলে নহে স্বর্গের বসতি।।
 শুনিয়া গোবিন্দ তথা করিল গমন।
 নরকে মারিয়া পাইলেন কন্যাগণ।।
 ষোড়শ সহস্র কন্যা দেবের কুমারী।
 এককালে বিবাহ করিলেন মুরারী।।