পাতা:কিন্নর দল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Se কিয়ার দল পালো ক'দিন ধরে শানির অনবরত টক লেবু খাওয়ার কথা। শানির রোগের কারণ দিনের আলোয় প্রকাশিত হোল। ঐ কচি মেয়ে অন্ত এ্যাসিড সহ করতে পারে? ঠিক সেই মুহূৰ্ত্তে ঢুদের ওপর একটি বিড়াল করুণ সুরে বিলাপ করতে লাগলো। সম্প্রতি তার একটি সস্তান মারা গেছে। আমার স্ত্রী চমকে উঠে আমায় অনুরোধ করলে, “আগে বেড়ালটাকে দূর করে এস-আগে ওকে দূর করে দাও।” আমি তার অনুরোধ শুনলুম না। বিজু কঁাদলো ফুলে ফুলে, “তবে আমায় দূর করে দাও । আমি পথের ধূলো-আমি কেউ নয়—আমায় গ্ৰন্থ হয় না একটুও!” একটু সুস্থ হয়ে শানিকে ডাক্তারবাড়ী নিয়ে গেলুম। ডাক্তার এক ডোজ ওষুধ দিলে। সেটা খাইয়ে দিলুম যথা সময়ে। বিজু সারারাত্রি মেয়েকে বুকে করে নিয়ে রইলো, আর আমার অবিশ্বাস দেখে দুঃখ প্রকাশ করলে, “বললুম পীরের কাছ থেকে জলপাড়া নিয়ে এস। তা হোল না । ডাক্তার-বদ্যি কি এসব সারাতে পারে ?” কিন্তু বিজুর কথাই মিথ্যা হোল। ডাক্তার আশ্চৰ্য্য রকমে শানিকে নিরাময় করলে। সকাল বেলা শানি আবার তার সহজ। সবল পুর্ব স্বাস্থ্য ফিরে পেল। আবার সে খেতে লাগলো, হাসতে লাগলো । অফিস যাবার সময় বিজুকে বললুম, “ডাইনীর হাত থেকে যখন শানি রেহাই পেল। তখন কমলাকে ক্ষমা করে।” বিজুরা যেন অসহ্য হােল আমার কথা, বললে, “মাইরি বলছি, তুমি আমায় পাগল করে দেবে। কালকের মধ্যে যদি না বাড়ী বদলাও, তাহলে সত্যি সত্যি আমি বাপের বাড়ী চলে যাবো ।” অগত্যা সেই শনিবার দিনই রাত্রে বাড়ী ঠিক করে ফিরলুম। পরের দিন জিনিষপত্র নিয়ে উঠে গেলুম নতুন বাসায়। পরের জন্তে f' X স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে সংসারের শান্তি নষ্ট করতে আমি নারাজ।