পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৪৯

কোন রন্ধ্র প্রাপ্ত হইল না। অনন্তর ধর্ম্মরাজও অস্ত্রবর্ষণে প্রবৃত্ত হইলে দুই বীর শার্দ্দূলদ্বয়ের ন্যায় পরস্পরকে ক্ষত বিক্ষত করিতে লাগিলেন। অল্পক্ষণমধ্যেই মহাবীর শল্য এক খরধার ক্ষুরের দ্বারা যুধিষ্ঠিরের কার্ম্মুক ছেদন করিলে ধর্ম্মরাজ অতিশয় রুষ্ট হইয়া অন্য শরাসন গ্রহণপূর্ব্বক নতপর্ব্ব বাণসমূহে শল্যর সারথি ও অশ্ব বিনষ্ট করিলেন। তখন অশ্বথামা মদ্ররাজকে স্বীয় রথে আরোপিত করিয়া প্রস্থান করিলেন।

 কিন্তু যুধিষ্ঠিরের সিংহনাদ এবং পাণ্ডবগণের আনন্দধ্বনি কিছুতেই সহ্য না করিতে পারিয়া শল্য সত্বর অন্য রথে আরোহণপূর্ব্বক যুধিষ্ঠিরের সমক্ষে প্রত্যাগত হইলেন। তখন পাণ্ডব পাঞ্চাল ও সোমকগণ তাঁহাকে চতুর্দ্দিক হইতে বেষ্টন করিলেন। তদ্দর্শনে দুর্য্যোধনও কৌরবগণকে লইয়া তাঁহার রক্ষার নিমিত্ত অগ্রসর হইলেন। অনন্তর মদ্রাধিপতি সহসা যুধিষ্ঠিরকে বক্ষস্থলে বিদ্ধ করিলে ধর্ম্মরাজ উত্তেজিত হইয়া মহাবেগে শল্যর উপর শরাঘাত করিয়া তাঁহাকে মূর্চ্ছিতপ্রায় করিয়া অতিশয় আহ্লাদিত হইলেন।

 তখন মহাবীর কৃপ ছয় শরে যুধিষ্ঠিরের সারথির শিরচ্ছেদনপূর্ব্বক তাহাকে ভূতলে পাতিত করিলেন। তাহাতে মহাবল বৃকোদর মদ্রারাজের ধনু দ্বিখণ্ড করিয়া তাঁহার অশ্বগণ বিনষ্ট করলেন। এবং ধৃষ্টদ্যুম্ন শিখণ্ডী সাত্যকি প্রভৃতি বীরগণ শল্যকে শাণিত শরনিকরে সমাচ্ছন্ন করিলেন।