পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

đg কৃষ্ণকান্তের উইল কালো কুৎসিতের এত মুখ-অনন্ত ঐশ্বৰ্য্য-দেবীদুল্লভ স্বামী—লোকে কলঙ্কশূন্ত যশ– অপরাজিতাতে পদ্মের আদর ? আবার তার উপর মল্লিকার সৌরভ ? গ্রামের লোকের এত সহিত না। তাই, পালে পালে, দলে দলে, কেহ ছেলে কোলে করিয়া, কেহ ভগিনী সঙ্গে করিয়া, কেহ কবরী বাধিয়া, কেহ কবরী বাধিতে বাধিতে, কেহ এলোচুলে সংবাদ দিতে আসিলেন, “ভমর তোমার মুখ গিয়াছে।”—কাহারও মনে হইল না যে, ভ্রমর পতিবিরহবিধুরী, নিতান্ত দোষশূন্য, দুঃখিনী বালিকা। & ভ্রমর আর সহ্য করিতে না পারিয়া, দ্বার রুদ্ধ করিয়া, হৰ্ম্ম্যতলে শয়ন করিয়া, ধূল্যবলুষ্ঠিত হইয়া কাদিতে লাগিল। মনে মনে বলিল, “হে সন্দেহভঞ্জন ! হে প্রাণাধিক । তুমিই আমার সন্দেহ, তুমিই আমার বিশ্বাস । আজ কাহাকে জিজ্ঞাসা করিব ? আমার কি সন্দেহ হয় ? কিন্তু সকলেই বলিতেছে। সত্য ন হইলে, সকলে বলিবে কেন ! তুমি এখানে নাই, আজি আমার সন্দেহভঞ্জন কে করিবে ? আমার সন্দেহভঞ্জন হইল না—তবে মরি না কেন ? এ সন্দেহ লইয়া কি বাচা যায় ? আমি মরি না কেন ? ফিরিয়া আসিয়া প্ৰাণেশ্বর ! আমায় গালি দিও না যে, ভোমরা আমায় না বলিয়৷ মরিয়াছে।” দ্বাবিংশতিতম পরিচ্ছেদ এখন, ভ্রমরেরও যে জ্বালা, রোহিণীরও সেই জ্বালা। কথা যদি রঢ়িল, রোহিণীর কাণেই বা না উঠিবে কেন ? রোহিণী শুনিল, গ্রামে রাষ্ট যে, গোবিন্দলাল তাহার গোলাম— সাত হাজার টাকার অলঙ্কার দিয়াছে। কথা যে কোথা হইতে রচিল, তাহ রোহিণী শুনে নাই—কে রটাইল, তাহার কোন তদন্ত করে নাই ; একেবারে সিদ্ধান্ত করিল যে, তবে ভ্রমরই রটাইয়াছে, নহিলে এত গায়ের জ্বালা কার? রোহিণী ভাবিল-ভ্রমর আমাকে वख्न জ্বালাইল। সে দিন চোর অপবাদ, আজ আবার এই অপবাদ। এ দেশে আর আমি থাকিব না। কিন্তু যাইবার আগে একবার ভ্রমরকে হাড়ে হাড়ে জ্বালাইয়। যাইব । - রোহিণী না পারে এমন কাজই নাই, ইহা তাহার পূর্বপরিচয়ে জানা গিয়াছে। রোহিণী কোন প্রতিবাসিনীর নিকট হইতে একখানি বানারসী শাড়ী ও এক মূট গিলটির গহনা চাহিয়া আনিল। সন্ধ্যা হইলে, সেইগুলি পুটুলি বাধিয়া সঙ্গে লইয়। রায়দিগের । অন্তঃপুরে প্রবেশ করিল। যথায় ভ্রমর একাকিনী মৃংশয্যায় শয়ন করিয়া, এক একবার কাদিতেছে, এক একবার চক্ষের জল মুছিয়া কড়ি পানে চাহিয়া ভাবিতেছে, তথায় রোহিণী গিয়া পুটুলি রাখিয়া উপবেশন করিল। ভ্রমর বিস্মিত হইল—রোহিণীকে দেখিয় বিষের জ্বালায় 嘯