পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शुक्ल ૨૭૧ দরে এসে হঠাৎ মনে হ’ল, তাকে আর একটা কথা বলে আসি। যদি তার নাগাল পাই, এই ভেবে ফিরে গেলাম। টেশনের কাছে গিয়ে তাকে দেখতে পেলাম। তখন সে আর একা নয়; ইংরেজী কাপড় পরা একটা পাহাড়ী ছোঁড়াও তার সঙ্গে আছে। দুজনে গিয়ে এক পাণওয়ালার দোকানের সামনে দাঁড়াল। ওরা কথাবাত্তা কি কয়, শোনবার জন্যে আমি নিঃশব্দে তাদের পিছনে গিয়ে দাঁডালাম। ছোঁড়াটা পাণওয়ালার কাছে এক প্যাকেট কাঁচি সিগারেট চাহলে। পাণওয়ালা বললে, বিলাতী সিগারেট বেচনা গান্ধী মহারাজকা হকুম নেহি হ্যায়, সাহেব !" ঘড়ি বললে—“That Gandhi Chap has become a great nuisance”—oosie o osobi os sigs on to দাঁড়িয়েছে —এই শমনেই রাগে আমি আর থাকতে পারলাম না। তাদের সমখে গিয়ে বললাম—অবশ্য ইংরেজীতে—"ঘড়ি, এ কি কথা বলছ তুমি ? ছোঁড়াটা ত আমাকে দেখেই সরে পড়ল। ঘড়ি কি উত্তর দেবে, খানিকক্ষণ ভেবে পেলে না। তার পর হেসে বললে —‘ওটা আমি ঠাট্টা করে বলেছি বইত নয় —আমি তাকে কপট, মিথ্যাবাদিনী এই সব বলে তিরস্কার করে, তার মুখের উপর পাট বলে এসেছি মা—এ মহত্তে থেকে তোমার সঙ্গে আর কোনও সম্মবন্ধ আমার রইল না—যে মুখে তুমি মহাত্মাকে অপমান করেছ, সে মুখ আমি তার দেখতে চাইনে।" আমি বলিলাম, “তা বেশ করেছ বাবা। ও-সব পাহাড়ী মেয়ে, ওদের কি কোনও নীতিজ্ঞান আছে ? তোমাকে বলে, ও সিগারেট খাওয়া বন্ধ করেছে, অথচ লুকিয়ে লকিয়ে খেতে ছাড়তো না, এ আমি নিজের চক্ষে দেখেছি বাবা, খাকীও দেখেছে।” “খেত নাকি মা ? কবে দেখেছ তুমি ?” আমি কবে এবং কোথায় উহা প্রত্যক্ষ করিয়াছিলাম, তাহা সন্ধাকে বলিলাম। শনিয়া সে বলিল, “তাই নাকি ? কি ঘোর মিথ্যাবাদিনী ! অথচ আজ বিকেলেই সে আমাকে বলেছে, যে দিন থেকে তুমি মানা করেছ, সে দিন থেকে সিগারেট আমি পশ করিনি —সিগারেটের উপর আমার ভয়ানক ঘণা জন্মে গেছে।" মাতা-পত্রে উভয়েই প্রায় পাঁচ মিনিট নিস্তবধ হইয়া বসিয়া রহিলাম। তারপর বলিলাম, "রাত হ’ল, এবার খাবে চল বাবা। ও-সব চিন্তা মন থেকে ধয়ে মুছে ফেল।" সন্ধা বলিল, ”খাব মা, কিন্তু আজ আমি আলাদা থালায় খাব না। তোমার পাতের প্রসাদ খেয়ে, তোমাদের মনে দুঃখ দিয়ে যে পাপ করেছি আমি, সে পাপ থেকে আমি মন্ত হব।" Es “আচ্ছা, তাই হবে । দুজনকার লুচিই এক থালায় দিতে বলি। তুমি ততক্ষণ কাপড়-চোপড় বদলে নাও ৷” বলিয়া আমি বাহির হইলাম। A. দয়ার খলিয়াই দেখি, খাকী দাঁড়াইয়া ছিল, সরিয়া গেল। হলে গিয়া খাকী আনন্দে নত্য করিতে করিতে বলিতে লাগিল, “দয়ারের বাইরে দাঁড়িয়ে আমি সব কথা শুনেছি মা ! বেশ হয়েছে, ৰেশ হয়েছে, বেশ হয়েছে--ঘড়ি হতচ্ছড়িী উননমুখী বাঁদরী —তুই নিমতলার ঘাটে যা—নিমতলার ঘাটে যা-তুই মর মর মর্য !" বলিয়া সে মট-মট রুরিয়া আপন আঙ্গলে মটকাইতে লাগিল । “ছি মা, কাউকে কি মরা মরা বলতে আছে ? সবাই সেই ভগবানের ছেলে-মেয়ে! রাত হয়েছে, যাও, তুমি এখন শায়ে পড়গে।”—বলিয়া আমি রান্নাঘরের দিকে অগ্রসর হইলাম। রাত্রে সসংবাদটা শনাইলে উনি বলিলেন, “আমি জানি, আমার ছেলে, অমন দাবধি তার বেশী দিন থাকবে না ?” - - দেখ একবার অবিচার ? ওঁর ছেলে বলিয়াই নিজ বাহুবলে সে যেন জাল ছিড়িয়া বাহির হইতে পারিয়াছে! আর আমি মাগী যে মা মঙ্গলচণ্ডীর কাছে কত মাথা খাঁড়িয়া, কত পজা মানিয়া ছেলের মন ফিরাইলাম, সে কথা ধৰ্ত্তব্যের মধ্যেই আসিল না !