পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ෆෆ9 গল্প-গ্রন্থাবলী এই পর্যন্ত বলিয়া বন্ধ মৌন হইয়া রহিলেন। রাজপত্র ব্যাপার সমস্ত বঝিতে পারিলেন। ইহা মালেক সাদেকেরই কীত্তি’। তথাপি জিজ্ঞাসা করিলেন—“কেন এরপ হইল, আপনার কন্যাকে কিছু জিজ্ঞাসা করিয়াছেন কি ?” இ. বন্ধ কহিলেন—“জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম। কন্যা বিশেষ কিছু বলিতে পারিল না। কেবল বলিল—“যখন আমাদের শয়নকক্ষ হইতে নৰ্ত্তকীগণ বিদায় গ্রহণ করিল, তখন শাহজাদা উঠিয়া বার বন্ধ করিয়া দিলেন। আমি পালকে শয়ন করিলাম। শাহজাদা পালকের নিকটবত্তী হইবামাত্র কোথা হইতে এক ভয়ঙ্কর শব্দ উত্থিত হইল। শান্য হইতে যেন এক মণিময় সিংহাসন নামিয়া আসিল । তাহার উপর এক রূপবান যাবাপর্ষ রাজবেশে উপবিট ছিলেন। তাঁহার হস্তে উলঙ্গ তরবারি। চক্ষ ক্ৰোধে রক্তবর্ণ। তরবারির এক আঘাতে শাহজাদার মস্তক কাটিয়া ফেলিয়া অন্তহিত হইলেন । আমি ভয়ে জ্ঞানশন্য হইয়া পড়িলাম, আর কিছুই জানি না। —আমার বোধ হইল কোনও ভৌতিক কাণ্ড হইবে। সেই অবধি ভূতের ভয়ে বাদশাহ বহন প্রকার তাবিজাদি ধারণ করিয়াছেন, এবং সহরের সব্বত্র মৌলানাগণ ইসিম আজম ও কোরাণ পাঠ পরিতেছে।” বন্ধ আবার মৌনাবলম্বন করিলেন। রাজপত্রে ও মবোরক সন্ধ্যা সমাগত দেখিয়া বিদায়.গ্রহণ করিলেন। চতুর্থ পরিচ্ছেদ রাজপত্র বাসস্থানে ফিরিয়া, আহারাদি করিয়া শয়ন করিলেন। মবোরক তাঁহার কাছে আসিয়া বলিল—“শাহজাদা, এতদিনে অভীষ্ট সিদ্ধ হইয়াছে, অথচ তোমার মন এমন বিষন্ন কেন ?” রাজপত্রে কহিলেন-—“মবোরক, সেই রুপসী-রত্নকে দেখিয়া আমার মনে হরিষে বিষাদ উৎপন্ন হইয়াছে।” মবোরক বলিল—“কেন রাজকুমার, বিষাদ কিসের ?” শাহজাদা বলিলেন—“মবারক, তুমি বন্ধ হইয়াছ, আমার মনের দুঃখ কি বুঝিবে ? আমি ষে দিন হইতে ঐ কন্যার ছবি দেখিয়াছি, সেই দিন হইতেই আমার মন প্রেমঅগ্নিতে দগধ হইতেছে। এতদিন পরে যদি তাহার দেখা পাইলাম, তাহাকে লাভ করিতে পারিব না।” মবারক শনিয়া বলিল—“সব্বনাশ ! এমন চিন্তা মনেও প্ৰথান দিও না। মালেক সাদেকের প্রণয়িণীকে তাঁহার নিকট পেপছিয়া দিবার উপায় চিন্তা কর। অন্যরাপ কামনা পরিত্যাগ কর। এদেশের বাদশাহজাদার কি দশা হইয়াছে তাহা ত তুমি সবকণেই শুনিলে।” রাজপত্রে বলিলেন—“শুনিলাম বলিয়াই ত এই বিষাদ।” মবোরক তখন ফকীর-কন্যাকে কি উপায়ে লইয়া গিয়া মালেক সাদেকের হস্তে অপণ করা যাইতে পারে, তাহার পরামশাই করিতে লাগিল। অবশেষে সিথর হইল, ফকীরকে বলিয়া কহিয়, বুঝাইয়া, বিবাহ করিবার ছল করিয়া, শাহজাদা ঐ কন্যাকে লইয়া গিয়া মালেক সাদেক সমীপে অপশ করবেন। সে রাত্রি শাহজাদা নিদ্রা যাইতে পারলেন না। -সেই সন্দেরীর চন্দ্রমুখ যতই তাঁহার মনে পড়ে, ততই অন্তরে প্রেমানি জনলিয়া উঠে। কোনও ক্রমে রাত্রি প্রভাত হইল। রাজপত্র সনান করিয়া, বেশ বিন্যাস করিয়া, বাজারে গিয়া বিবিধ প্রকার শতক ও হরিবণ" মেওয়া ফল, মাংস ও অন্যান্য সমবাদ, খাদ্য ও পেয়, বিবিধ প্রকার বস্ত্ৰালঙ্কার প্রভৃতি উপহার দ্রব্য কয় করিয়া, মবারকসহ ফকীরের কুটীরে উপস্থিত হইলেন। ফকীর মহা সমাদরে তাঁহাকে সম্প্রবন্ধনা করিয়া বসাইলেন। কিয়ৎক্ষণ বাক্যালাপের পর রাজপত্র