পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जह्रश्न निब्रटझ्न হাবসী রাজ্য পরিত্যাগ করবার পর দুই তিন মাস অতীত হইলে বাদশাজাদা অলমাশ এক প্রকাণ্ড উপবন আসিয়া পৌছিলেন। তথায় বিবিধ বর্ণের পপসকল প্রস্ফটিত হইরা রহিয়াছে। চামেলি, চম্পা, গোলাপ প্রভৃতি ফলকুল মনোন্মাদকর সগন্ধি বিতরণ করিতেছে। উপবনের প্রান্তদেশে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন একটি লতাবক্ষেপণে উচ্চ পন্বত। নিনে বড় বড় বনস্পতিসকল দণ্ডায়মান। একটি সশীতল বারিপণ কুণ্ডও রহিয়াছে। পৰবত হইতে জল নামিয়া সেই কুণ্ডে প্রবেশ করিতেছে এবং অপর এক স্থান দিয়া বাহির হইয়া যাইতেছে। বাদশাজাদা সেই কুণ্ড দেখিলেন, এই বোধ হয় জমিলাবান কথিত সাঁ-মোরগের আবাস পান। এই সিদ্ধান্ত করিয়া, অশব হইতে অবতরণ করিয়া সেই পথানে বিশ্রামের আয়োজন করিলেন। চরিবার জন্য অশবকে ছাড়িয়া দিলেন। কুণ্ডে নামিয়া, হস্তপদাদি ধৌত করিয়া, প্রথমে নামাজ পড়িলেন। অবশেষে পেটিকা হইতে খাদ্য বাহির করিয়া, কিছর ভোজন করিয়া জিনপোষ পাতিয়া ব্যক্ষতলে শয়ন করিলেন। → কিঞ্চিৎ নিদ্রাবেশ হইয়াছে, এমন সময় তাঁহার অশব মহাভয়ে শব্দ করিতে করিতে তাহার বিছানার কাছে আসিয়া দণ্ডায়মান হইল। রাজকুমার জাগিয়া উঠিয়া, ইতস্ততঃ দটিপাত করিতেই দেখিতে পাইলেন, এক বহৎ অজগর সপ ফণা বিস্তার করিয়া পব্বতের পাদদেশমিথত একটি মহাবক্ষের নিকট যাইতেছে। তাহার দেহভরে পথস্থিত প্রস্তরখণ্ডসকল চণ হইয়া ধলি হইয়া যাইতেছে । সপকে দেখিবামাত্র রাজকুমার ইসাক পয়গম্বরের ধন লইয়া সপকে লক্ষ্য করিয়া একটি তীর চালাইলেন। তীরের আঘাতে সপ অতি বিকট শব্দে গজন করিতে লাগিল এবং যাতনায় ভূমিতে পােচ্ছ আছড়াইতে লাগিল। বিষেব উত্তাপে নিকটস্থ বক্ষসকল জনলিয়া উঠিল। রাজকুমারের শরীর সে উত্তাপে অত্যন্ত জন্তজারিত হইল। তখন তিনি দ্বিতীয় একটি তীর লইষা সপোর মস্তক বিদ্ধ করলেন। সপ তখন ভূমিতে লুণ্ঠিত হইয়া প্রাণত্যাগ করিল। বাদশাজাদা সেই সময় দোখলেন, যে ব্যক্ষ লক্ষ্য করিয়া সপ যাইতেছিল, সেই বক্ষে একটি পক্ষীর বাসা রহিয়াছে। পক্ষীশাবকগণ মুখ বাহির করিযা সপোর সহিত রাজকুমারের যন্ধ দেখিতেছিল। রাজকুমার ভাবিলেন ইহারাই বোধ হয় সী-মোরগ পক্ষীর শাবক হইবে। এই ভাবিয়া সপদেহ খণ্ড খণ্ড করিয়া কাটিয়া, সেই মাংস পক্ষী শাবকদিগকে খাইতে দিলেন। শাবকগণ মাংস আহার করিয়া পরম পরিতুষ্ট হইয়া নিদ্রা গেল। এদিকে রাজকুমারও কুণ্ডে নামিয়া নিজ দেহ হইতে সপরন্ত ধৌত করিয়া বস্ত্র পরিবত্তন করিয়া, জিনপোষ বিছাইয়া শয়ন করিলেন। অলপ সময়ের মধ্যেই নিদ্রিত হইষা পড়িলেন। কিছুক্ষণ পরে আকাশ যেন অন্ধকার হইয়া আসিল। সন্য ঢাকিয়া গেল। সনসন করিয়া শব্দ হইতে লাগিল। সী-মোরগ ও সী-মরগী চরিয়া বাসায ফিরিয়া আসিল । সাঁ-মোরগ বক্ষের নিকট আসিয়া বলিল—“আমরা যখন ফিরিযা আসি, তখন প্রত্যহ আমাদের শাবকগণ ক্ষুধাষ কলবল করিতে থাকে, আজ তাহারা কোথায় ?” এই কথা বলিতে বলিতে দেখিতে পাইল, কুণ্ডেব তীরে বাজকুমার নিশ্চিন্ত মনে নিদ্রা যাইতেছেন। তাঁহাকে দেখিয়া সাঁ-মোরগ নিজ পত্নীকে বলিল—“নিশ্চয়ই এই ব্যক্তি আমাদের শাবককে হত্যা করিয়াছে। মাঝে মাঝে আমাদের শাবককে কে আসিয়া খাইয়া ফেলে, এতদিন সন্ধান পাই নাই। আজ বুঝিলাম এই ব্যক্তিরই কাৰ্য্য।” এই বলিয়া ক্ৰোধে সাঁ-মোরগ একখণ্ড তিনশত মণ ওজনের পাথর পন্বত হইতে খসাইয়া মুখে করিয়া নিদ্রিত রাজকুমারের উপর ফেলিতে চাহিল।