পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3> げ গল্প-গ্রন্থাবলী বলিতেছি। আমাকে হাঁকাইয়া দিয়াছে। ভাবিতাম, ভবানীশঙ্কর অমন ভাল লোক, অত বড় বিদ্বান-ও কখনও অধম করিবে না। কিন্তু দেখন একবার কাণ্ডখানা -এখন কােজ সাহেব, আপনি যদি দয়া করেন, তবেই আমার টাকাগুলি উদ্ধার হয়!" কাজি সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “আচ্ছা রসীদ না হয় লও নাই, টাকাটা জমা রাখবার সময় সেখানে অন্য কেহ উপস্থিত ছিল কি ?” “কেহই ছিল না। শুধ সে আর আমি।” - “তবে বাপ আমি কি করিব বল। একটা রসাদ নাই, একটা সাক্ষীও নাই—কি করিয়া তোমার টাকা উদ্ধার কাঁরয়া দিব ?” মাণেকচাঁদ বলিল, “তবে কি হজারের ন্যায় ধমঞ্জ বিচারপতি দিল্লী সহরে থাকিতে, গরীবের উপর এই বে-আইনি হইবে ? কোনও উপায় চিন্তা করন ধৰ্ম্মাবতার ” কাজি সাহেব ভৃত্যকে ডাকিয়া বলিলেন, “আর, চালম বদল দে।” মাণেকচাঁদকে বলিলেন, “আচ্ছা আমি চিন্তা করি, তুমি কল্য সন্ধায় আবার আসিয়া আমার সহিত সাক্ষাৎ করিও । আর, সাবধান, আমার কাছে আসিয়াছিলে, নালিস করিয়াছ, একথা কেহই যেন ঘৃণাক্ষরে জানিতে না পারে। এখন যাও।” “হলফুম তামিল করিব হজের”—বলিয়া মাণেকচাঁদ কাজি সাহেবকে সসম্প্রমে অভিবাদন করিয়া প্রস্থান করিল। s - - কাজি সাহেব সেইখানেই বসিয়া আবার আলবোলার নল মখে লইলেন, এবং চক্ষ মদিয়া, চিন্তায় ব্যাপ্ত হইলেন। ঘণ্টাখানেক পরে তাহার মুখ দিয়া বাহির হইল, “ঠিক হোগা।”–চক্ষ খালিয়া বলিলেন, “আরে কৌন হ্যায়, চীলম বদল দে।" পরদিন সন্ধ্যার পর মাণেকচাঁদ আসিয়া হাজির হইল। কাজি জিজ্ঞাসা করিলেন, “আজ কি বার " “আজ হজের মঙ্গলবার ” "পরশ বহিস্পতিবারে, বিকালে, তুমি আবার ভবানীশঙ্করের নিকট গিয়া টাকা চাহিবে। যদি সে পনরায় অস্বীকার করে, তবে তুমি তাকে এই বলিয়া শাসাইবে, আচ্ছা, তবে অগত্যা আমাকে প্রধান কাজি সাহেবের দরবারে নালিসমন্দ হইতে হইবে। কল্য শক্লেবার আদালত বন্ধ। পরশ শনিবার প্রথম কাছারিতে নিশ্চয়ই আমি তোমার নামে নালিস দায়ের করিব, দেখি তিনি ইহার কোনও প্রতীকার করেন কি না।”—এই বলিয়া তুমি বাড়ী চলিয়া যাইবে।” “যো হক্কুম হজের।”—বলিয়া মাণেকচাঁদ প্রস্থান করিল। পরদিন কাজি সাহেব মলসী ভবানীশঙ্করকে এই পত্ৰখানি লিখিলেন— “বন্ধ, বহুদিন আপনার সহিত'দেখা-সাক্ষাৎ নাই। আজ সন্ধ্যার পর আমার গরীবখানার যদি একবার দশন দেন ত বিশেষ বাধিত হই। জরুরী কথাবাত্তা আছে। ইতি।” পত্র পাইয়া ভবানীশঙ্কর একটা বিধায় পাঁডয়া গেল। হঠাৎ কাজে সাহেবের এ তলব কেন ? তবে মাণেকচাঁদ তাঁহার কাছে গিয়া আমার নামে কিছল লাগাইয়াছে নাকি ?—তাই তাহার টাকা ফেরৎ দিবার জন্য বন্ধভাবে আমাকে অনুরোধ করিবার জন্যই তাকেন নাই ত ?” সন্ধ্যার পর ভবানীশঙ্কর গিয়া কাজি সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিল। কাজি সাহেক অত্যন্ত অন্তরঙ্গভাবে তাহার সহিত আলাপ করিতে লাগিলেন। অবশেষে বললেন, ইহা দেখিতেছেন ত?” ;