পাতা:গীতবিতান.djvu/৫০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৯২
প্রেম

ওগো  তাই কত নিশি চাঁদ ওঠে হাসি,  তাই কেঁদে যায় প্রভাতে।
ওগো  তাই ফুলবনে মধুসমীরণে  ফুটে ফুল কত শোভাতে।
ওই  বাঁশিস্বর তার আসে বারবার,  সেই শুধু কেন আসে না।
এই  হৃদয়-আসন শূন্য পড়ে থাকে,  কেঁদে মরে শুধু বাসনা।
মিছে  পরশিয়া কায় বায়ু বহে যায়,  বহে যমুনার লহরী।
কেন  কুহু কুহু পিক কুহরিয়া ওঠে,  যামিনী যে ওঠে শিহরি।
ওগো,  যদি নিশিশেষে আসে হেসে হেসে  মোর হাসি আর রবে কি
এই  জাগরণে-ক্ষীণ বদনমলিন  আমারে হেরিয়া কবে কী।
আমি  সারা রজনীর গাঁথা ফুলমালা  প্রভাতে চরণে ঝরিব—
ওগো,  আছে সুশীতল যমুনার জল,  দেখে তারে আমি মরিব।


৩০৪

কখন যে বসন্ত গেল, এবার হল না গান।
কখন বকুলমূল  ছেয়েছিল ঝরা ফুল,
কখন যে ফুল-ফোটা হয়ে গেল অবসান।
এবার বসন্তে কি রে  যুঁথিগুলি জাগে নি রে—
অলিকুল গুঞ্জরিয়া করে নি কি মধুপান।
এবার কি সমীরণ  জাগায় নি ফুলবন—
সাড়া দিয়ে গেল না তো, চলে গেল ম্রিয়মাণ।
বসন্তের শেষ রাতে  এসেছি যে শূন্য হাতে—
এবার গাঁথি নি মালা, কী তোমারে করি দান।
কাঁদিছে নীরব বাঁশি,  অধরে মিলায় হাসি—
তোমার নয়নে ভাসে ছলোছলে অভিমান।


৩০৫

বাঁশরি বাজাতে চাহি, বাঁশরি বাজিল কই।
বিহরিছে সমীরণ, কুহরিছে পিকগণ,
মথুরার উপবন  কুসুমে সাজিল ওই।