পাতা:গীতবিতান.djvu/৬৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বসন্ত
৫২৯

মন্ত্র যে তার লাগল প্রাণে  মোহন গানে  হায়,
বিকশিয়া উঠল হিয়া নবীন সাজে  ওগো নবীন রাজা।
তোমার রঙে দিলে তুমি রাঙিয়া  ও তার আঙিয়া  ওগো নবীন রাজা।
তোমার মালা দিলে গলে  খেলার ছলে  হায়—
তোমার  সুরে সুরে তাহার বীণা বাজে  ওগো নবীন রাজা।

২৫৮

ঝরো-ঝরো ঝরো-ঝরো ঝরে রঙের ঝর্‌না।
আ য়  আ য়  আ য়  আয় সে রসের সুধায় হৃদয় ভর্-না।
সেই  মুক্ত বন্যাধারায় ধারায়  চিত্ত মৃত্যু-আবেশ হারায়,
ও সেই  রসের পরশ পেয়ে ধরা নিত্যনবীনবর্ণা।
তার কলধ্বনি দখিন-হাওয়ায় ছড়ায় গগনময়,
মর্মরিয়া আসে ছুটে নবীন কিশলয়।
বনের  বীণায় বীণায় ছন্দ জাগে  বসন্তপঞ্চমের রাগে—
ও সেই  সুরে সুরে সুর মিলিয়ে আনন্দগান ধর্-না।

২৫৯

পূর্বাচলের পানে তাকাই অস্তাচলের ধারে আসি।
ডাক দিয়ে যার সাড়া না পাই তার লাগি আজ বাজাই বাঁশি।
যখন এ কূল যাব ছাড়ি  পারের খেয়ায় দেব পাড়ি,
মোর ফাগুনের গানের বোঝা বাঁশির সাথে যাবে ভাসি।
সেই-যে আমার বনের গলি রঙিন ফুলে ছিল আঁকা।
সেই ফুলেরই ছিন্ন দলে চিহ্ন যে তার পড়ল ঢাকা।
মাঝে মাঝে কোন্ বাতাসে  চেনা দিনের গন্ধ আসে,
হঠাৎ বুকে চমক লাগায় আধ-ভোলা সেই কান্নাহাসি।

২৬০

নীল আকাশের কোণে কোণে ওই বুঝি আজ শিহর লাগে  আহা।
শাল-পিয়ালের বনে বনে কেমন যেন কাঁপন জাগে  আহা।