পাতা:গৃহদাহ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R গহীদাহ আবেদন নিঃশব্দে জানাইয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল । পরদিন যথাসময়ে সরেশের গাড়ি আসিয়া উপস্থিত হইল । কেদারবাব প্রস্তােহ হইয়াই ছিলেন, কন্যাকে লইয়া নিমন্ত্রণ রক্ষা করিতে যাত্রা করিলেন । সমরেশের বাটীর গেটের মধ্যে প্রবেশ করিয়া কেদারবাবা অবাক হইয়া গেলেন : সে বড়লোক, ইহা ত জানা কথা, কিন্তু তােহা যে কতখানি-শািন্ধ আন্দাজের দ্বারা নিশ্চয় করা এতদিন কঠিন হইতেছিল ; আজ একেবারে সে বিষয়ে নিঃসংশয় হইয়। বচিলেন । সমরেশ আসিয়া অভ্যর্থনা করিয়া উভয়কে গ্রহণ করিল ; হাসিয়া বলিল, মহিমের গোঁ আজিও ভাঙতে পারা গেল না কেদারবাব । কাল দাপরের আগে এ বাড়িতে ঢুকতে সে কিছতেই রাজী হলো না । কেদারবাব সে কথার কোন জবাবও দিলেন না । তিনজনে বসিবার ঘরে আসিয়া প্রবেশ করিতেই একজন প্রৌঢ়া রমণী দ্বারের অন্তরাল হইতে বাহির হইয়া অচলার হাত ধরিয়া তাহাকে বাড়ির ভিতরে লইয়া গেলেন । তাঁহার নিজের ঘরের মেজের উপর একখানি কাপেট বিছান ছিল, তাহারই উপর অচলাকে সযত্নে বসাইয়া আপনার পরিচয় দিলেন । বলিলেন, আমি সম্পপকে তোমার শাশাড়ি হই বৌমা । আমি মহিমের পিসী । অচলা প্ৰণাম করিয়া পায়ের ধলা লইয়া সবিস্ময়ে তাহার মািখপানে চাহিয়া কহিল, আপনি এখানে কবে এলেন ? মহিমের যে পিসী ছিলেন, তাহা সে জানিত না । প্রৌঢ়া তাহার বিসময়ের কারণ অনমান করিয়া, হাসিয়া কহিলেন, আমি এইখানেই থাকি মা, আমি সমরেশের পিসী ; কিন্তু মহিমও পর নয়, তাই তারও আমি পিসী হই মা । তাঁহার সর্বভাব-কোমল কন্ঠস্বরে এমনই একটা স্নেহ ও আন্তরিকতা প্রকাশ পাইল যে, একম হতেই অচলার বকের ভিতরটা আলোড়িত হইয়া উঠিল । তাহার মা নাই, সে অভাব এতটুকু পাণ করে, বাড়িতে এমন কোন আত্মীয় সন্ত্রীলোক কোনদিন নাই । তাহার জ্ঞান হওয়া পর্যন্ত এতদিন সে পিতার স্নেহেই মানষি হইয়া উঠিয়াছে ; কিন্তু সে স্নেহ ষে তাহার হৃদয়ের কতখানি খালি ফেলিয়া রাখিয়াছিল, ৩াহা একম হতেই সন্সেপাল্ট হইয়া উঠিল-আজ পরের বাড়ির পরের পিসিমা যখন “বেীমা’ বলিয়া ডাকিয়া তাহাকে আদর করিয়া কাছে বসাইলেন । প্রথমটা সে অভিনব সম্বোধনে একটুখানি লঙ্গিজত হইয়া পড়িল ; কিন্তু ইহার মাধব্য, ইহার গৌরব তাহার নারী-হৃদয়ের গভীর অন্তঃস্থলে বহনক্ষণ পর্যন্ত ধৰনিত হইতে লাগিল । দেখিতে দেখিতে দ’জনের কথা জমিয়া উঠিল । অচলা লঙ্গিজতমখে প্রশ্ন করিল, আচ্ছা পিসিমা, আমাকে যে আপনি কাছে বসালেন, কৈ ব্রাহ্ম-মেয়ে বলে ত ঘণা করলেন না । পিসীমা তাড়াতাড়ি আপনার অঙ্গলি প্রান্ত দবারা তাহার চিবিক চুম্বন গ্ৰহণ । করিয়া বলিলেন, তোমাকে ঘণা করব কেন মা ? একটু হাসিয়া কহিলেন, আমরা হিন্দর