পাতা:চন্দ্রলোকে যাত্রা - রাজেন্দ্রলাল আচার্য.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কামান নির্ম্মাণ

তাহারা জানিত যে সেই সরলপ্রাণ অনাড়ম্বর দুঃসাহসিক ব্যক্তির হৃদয়ে একটা কর্ম্ম-ব্যাকুলতা সর্ব্বদা তপ্ত অনলের মত প্রজ্জ্বলিত থাকিত। তিনি শুধু এই কথাই বলিতেন যে আমরা যাহাকে অসম্ভব বলি, পৃথিবীতে তাহাও সম্ভব হইয়া দাঁড়ায়।

 বার্বিকেন আত্ম-বিস্মৃত হইয়া এই অদ্ভুত লোকটীকে দেখিতেছিলেন, সহসা বহুলোকের সমবেত কণ্ঠে জয়ধ্বনি শুনিয়া তাঁহার চমক ভাঙ্গিল। তিনি দেখিলেন জাহাজ লোকে পূর্ণ হইয়া গিয়াছে। আর্দ্দান শত শত ব্যক্তির সহিত করমর্দ্দন করিতেছেন। করমর্দ্দন করিতে করিতে আর্দ্দান যখন দেখিলেন যে সে জনস্রোতের অন্ত নাই—তখন তিনি কালবিলম্ব না করিয়া আপন কক্ষে পলায়ন করিলেন। বার্বিকেন নীরবে তাঁহার অনুগমন করিলেন।

 কক্ষে প্রবেশ করিয়াই বার্বিকেন কহিলেন,—

 “আপনি তা’ হ’লে চন্দ্রলোকে যাওয়াই স্থির ক’রেছেন?”

 “নিশ্চয়।”

 “কিছুতেই নিবৃত্ত হ’বেন না।”

 “না। কিছুতেই নয়।”

 “আপনার প্রস্তাব যে কত গুরুতর সে বিষয়ে অবশ্যই সকল কথা ভেবে দেখেছেন?”

 “কি আর ভাব্‌বো? আমার কি অত সময় নষ্ট করার উপায় আছে? যেই শুন্‌লেম যে চন্দ্রলোকে কামানের একটা গোলা যা’চ্ছে, ভাব্‌লেম এই সুযোগে একবার বেড়িয়ে এলে হয়। এ আর এমনই বা কি একটা গুরুতর কাজ যে এত ভাব্‌তে হবে!

৩৯