পাতা:চিঠিপত্র (ঊনবিংশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুপ্রাপ্য গ্রন্থমালা প্রকাশের আয়োজন যারা করেছেন তাদের প্রতি সাধুবাদ সাহিত্যিক সৌজন্যের প্রচলিত অলস রতিরূপে প্রয়োগ করলে উদ্যোগীদের বঞ্চনা করা হবে। কেন না এই সকল গ্রন্থের যথোচিত গ্রাহক ও পাঠক থাকলে তারা সাধুবাদের চেয়ে উপযুক্ত পরিমাণে যথার্থ মূল্য পেতেন। শুনেছি তার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায় না। অথচ একথা মনে রাখতে হবে বাংলা সাহিত্যের পথরেখা অনেকখানি লুপ্ত হয়ে যেত যদি এই গ্রন্থগুলি উদ্ধারের চেষ্টা যথাকালে দেখা না দিত। এই লেখাগুলিকে আমরা প্রাচীন ব’লেই গণ্য করি পঞ্জিকার তারিখ গণনা করে নয়, এদের কালান্তরবর্তিতার সীমা-নির্ণয় ক’রে। বাংলা গদ্যসাহিত্যের আরম্ভ হয়েছে দূরকালে নয়, অন্যকালে। তখন বাংলা ভাষার ভূমিভাগে মাটি শক্ত হয়ে ওঠে নি, সাহিত্যের পথ হয় নি পাকা, তখন ভাবের ও চিন্তার চলফিরা ছিল সংশয়িত গতিতে। ভাষা যে মনের ধাত্রী তখন সে মন আপন আশ্রয়ের শিথিলতাবশত সম্পূর্ণ পরিণতি লাভ করতে পারেনি। সেইজন্য সেই সকল গ্রন্থে প্রাচীনত্বের স্বাদ পাওয়া যায়। ইতিহাসে অনুরাগী যাদের মন তারা এর সম্পূর্ণ পরিচয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এই দূরব্যাপী মনোযোগে ঔদাসীন্য অগভীর শিক্ষার লক্ষণ। এত আশ্চর্য দ্রুতবেগে বাংলা সাহিত্যের বৃদ্ধি হয়েছে যে এর সময়ের পথে মাইলের পরিমাপচিহ্ন সিকি মাইলের মাত্রাতেই দেওয়া সংগত। এ সাহিত্যে অল্পদুরে এগোলেই পিছনের দিকে দূরবীণ ধরার দরকার হয়ে পড়ে। এমন কি বঙ্কিমচন্দ্রের মতে যে সকল লেখক আধুনিক সাহিত্যের যুগপ্রবর্তক তাদের রচনারও প্রথম অংশ বাংলাসাহিত্যের পূর্বাহের পূর্বাহের ) পূর্বপ্রহরের অন্ধকারে অপরিস্ফুট। > ケ