পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলকারখানা নিয়ে কোনো আধুনিক দান্তে vita Nuova লিখচে না— কারণ ওতে নূতন থাকতে পারে কিন্তু Vita নেই। মানুষ যেদিন প্রথম আগুন জালিয়েছিল সেদিন স্তবগান করেছিল ; আগুনে তার রান্নার সুবিধা হয়েছিল বলে নয়, আগুনের নিজের মধ্যেই একটি চরম রহস্য আছে বলে । মানুষের কুড়ালের মধ্যে কোদালের মধ্যে সেই চরম রহস্য নেই। বিজ্ঞান যেখানে পরমাণুর পরমতত্ত্বের সামনে আমাদের বিস্মিত মনকে দাড় করায় সেখানে চরমকে দেখি— আমি সেই চরমের বন্দন৷ করেছি। কিন্তু বাম্পের যোগে যেখানে রেলগাড়ি চলে, সেখানে cleverকে দেখি perfectকে দেখিনে, সেখানে Vulcanকে দেখি Apolloকে দেখিনে। সেখানে কারখানাঘরে প্রবেশ করি, স্বষ্টির রহস্যমন্দিরে নয়। সেখানে কুন্ত্রীতার লজ্জা নেই, সেখানে অসম্পূর্ণত নগ্ন। সেখানে মাংসপেশি ফুলে উঠেছে কিন্তু লাবণ্য কোথায় ? সেখানে স্থলকে দেখি অনিৰ্ব্বচনীয়কে দেখিনে ত । তাই বাহবা দিই, কিন্তু সে বাহবায় ছন্দ আসেন । আজকের কালের বিরাট কারখানাঘরের সামনে দাড়িয়ে জগৎসুদ্ধ লোক ভয়ে বিস্ময়ে লোভে সমস্বরে বাহবা দিল, কিন্তু জানু নত হল না, প্রণাম করলে না, কেননা এ তো মন্দির নয়। পুরাতন দেবমন্দির মানুষ ভেঙে দিচ্চে, কিন্তু নূতন দেবমন্দির এখনো তো গড়া হ’ল না, তাই বলেই কি পূজার অর্ঘ্য নিয়ে যেতে হবে তার হাটের আড়ৎ ঘরে ? ইতি ২৮ মার্চ ১৯২৫ স্নেহাসক্ত শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 8\○