পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্ঠায়ের সঙ্গে। সময় এলেই উদাসীনভাবে এ শখকে মাটিতে পড়ে থাকতে দিতে নেই। দুঃখস্বীকারের হুকুম বহন করতে হবে, প্রচার করতে হবে । শাজাহানকে যদি মানবাত্মার বৃহৎ ভূমিকার মধ্যে দেখা যায় তাহলে দেখতে পাই সম্রাটের সিংহাসনটুকুতে র্তার আত্মপ্রকাশের পরিধি নিঃশেষ হয় না— ওর মধ্যে র্তাকে কুলোয় না বলেই এত বড়ো সীমাকেও ভেঙে র্তার চলে যেতে হয়— পৃথিবীতে এমন বিরাট কিছুই নেই যার মধ্যে চিরকালের মতো তাকে ধরে রাখলে তাকে খৰ্ব্ব করা হয় না। আত্মাকে মৃত্যু নিয়ে চলে কেবলি সীমা ভেঙে ভেঙে । তাজমহলের সঙ্গে সাজাহানের যে সম্বন্ধ সে কখনোই চিরকালের নয় – তার সঙ্গে তার সাম্রাজ্যের সম্বন্ধও সেই রকম । সে সম্বন্ধ জীৰ্ণপত্রের মতো খসে পড়েচে— তাতে চিরসত্যরূপী সাজাহানের লেশমাত্র ক্ষতি হয় নি । তাজমহলের শেষ দুটি লাইনের সর্বনাম “আমি” ও “সে” —যে চলে যায় সেই হচ্চে সে, তার স্মৃতিবন্ধন নেই,— আর যে অহং কঁদিচে সেই তো ভার-বওয়া পদাৰ্থ । এখানে আমি বলতে কবি নয়– “আমি-আমার" করে যেটা কান্নাকাটি করে সেই সাধারণ পদার্থটা । আমার বিরহ, আমার স্মৃতি আমার তাজমহল যে মানুষটা বলে, তারই প্রতীক ঐ গোরস্থানে— আর মুক্ত হয়েচে যে, সে লোকলোকাস্তরের যাত্রী— তাকে কোনো একখানে ধরে না, না তাজমহলে, না ভারতসাম্রাজ্যে, ন৷ সাজাহান নামরূপধারী বিশেষ ইতিহাসের ক্ষণকালীন অস্তিত্বে । Σ Σ &