পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so s }}r বিচলিত ভাব আর অধৈর্য দেখেছি। সমস্ত দিন অনাহার অক্ষাত। রুক্ষ শুষ্ক চেহারা, মুখ লাল হ’য়ে উঠেছে, কারে সঙ্গে কোনো কথা নেই, কেবল বারান্দার একধার থেকে আরেক ধার পর্যন্ত পায়চারি করছেন। কাছে কেউ যেতে সাহস করছে না, কেবল এগু,জ সাহেব একবার তার কাছে গিয়ে কি বললেন, আর কবি উত্তেজিত স্বরে বলে উঠলেন—“ও নো নো নো !” তার পর তার লেখবার টেবিলে বসে খসখস করে লর্ড হার্ডিংকে পত্র লিখে নিয়ে এসে এগু,জ সাহেবকে দেখতে দিলেন। এগু,জ সাহেব সেই চিঠি পড়ে বললেন বড় উগ্র হয়েছে। চিঠিটা আরো মোলায়েম করা দরকার। কবিকে অনেক সাধাসাধি করে সাহেব কিছু পরিবর্তন করতে সম্মত করালেন। কিন্তু যা পরিবর্তন হলো তাও সকলের মনে আতঙ্ক সঞ্চার করতেই লাগল। কবি আর মোলায়েম করতে রাজী হলেন না। সেই চিঠিই বোধ হয় লাট সাহেবের কাছে গিয়েছিল, এবং সমস্ত ভারতবাসীর অহিত আত্মসম্মান রক্ষা করেছিল। রবীন্দ্রনাথের বয়স পঞ্চাশ পূর্তি হ’লে সত্যেন্দ্র প্রস্তাব করেন যে সাহিত্য-পরিষৎকে দিয়ে তাকে সম্বর্ধনা করাতে হবে। সত্যেন্দ্র আর মণিলাল পরম উৎসাহ সহকারে টাকা সংগ্রহ করতে ও লোকমত গঠন করতে লেগে গেল। আমি বরাবর তাদের সহকারী হয়ে কাজ ক’রে অনুষ্ঠানটি স্বসম্পন্ন ক'রে তুলেছিলাম। ভাগ্যে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার আগে আমরা তাকে দেশের সাহিত্য-পরিষৎকে দিয়ে সম্বধন করাতে পেরেছিলাম, তাই দেশের ইজ্জৎ রক্ষা হয়েছে, নইলে আমাদের লজ্জা রাখবার আর জায়গা থাকৃত না । রবীন্দ্রনাথের বাড়ীতে নিমন্ত্রিত হ’য়ে আহার করুবার সৌভাগ্য আমার কয়েকবার হয়েছে। কবির সবই কবিত্বময় । আহার-স্থান সজ্জিত করা হয়েছিল যেন এক পরীস্থান রূপে । দুটি নিমন্ত্রণসভার বর্ণনা দেবার ক্ষীণ চেষ্টা আমি করেছি আমার যমুনাপুলিনের ভিখারিণী আর ‘জোড়বিজোড়’ নামক উপন্যাসের মধ্যে । २२b