পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছুটির পড়া ৰাসিতেন। রাজধর তাহ জানিতেন। আজ পিতার কাছে গিয়া ইশা খার নামে নালিশ করিলেন । রাজা ইশা খাকে ডাকাইয়া আনিলেন । বলিলেন, “সেনাপতি, রাজকুমারদের এখন বয়স হইয়াছে। এখন উহাদিগকে যথোচিত সম্মান করা উচিত।” “মহারাজ বাল্যকালে যখন আমার কাছে যুদ্ধশিক্ষা করিতেন, তখন মহারাজকে যেরূপ সম্মান করিতাম– রাজকুমারগণকে তাহ অপেক্ষা কম সম্মান করি না ।” রাজধর বলিলেন, “আমার অনুরোধ, তুমি আমার নাম ধরিয়া ভাকিয়ে না।” ইশা খ বিহাবেগে মুখ ফিরাইয়া কহিলেন, “চুপ করে, বৎস! অামি তোমার পিতার সহিত কথা কহিতেছি । মহারাজ, মার্জন করিবেন, আপনার এ কনিষ্ঠ পুত্রটি রাজ-পরিবারের উপযুক্ত হয় নাই । ইহার হাতে তলোয়ার শোভা পায় না। এ বড়ো হইলে মুনশির মতো কলম চালাইতে পারিবে— আর কোনো কাজে লাগিবে না।” এমন সময়ে চন্দ্রনারায়ণ ও ইন্দ্রকুমার সেখানে উপস্থিত হইলেন। ইশা খাঁ তাহাদের দিকে ফিরিয়া বলিলেন, “চাহিয়া দেখুন মহারাজ, এই তো যুবরাজ বটে। এই তো রাজপুত্র বটে।” রাজা রাজধরের দিকে চাহিয়া বলিলেন, “রাজধর, খা-সাহেব কী বলিতেছেন। তুমি অস্ত্রবিদ্যায় উহাকে সন্তুষ্ট করিতে পার নাই ?” রাজধর বলিলেন, “মহারাজ, আমাদের ধনুর্বিদ্যার পরীক্ষা গ্রহণ করুন, পরীক্ষায় যদি আমি সর্বশ্রেষ্ঠ না হই তবে আমাকে পরিত্যাগ করিবেন। আমি রাজবাটী ছাড়িয়া চলিয়া যাইব ।” রাজা বলিলেন, “আচ্ছা, আগামী সপ্তাহে পরীক্ষা হইবে । তোমাদের মধ্যে যিনি উত্তীর্ণ হইবেন তাহাকে আমার হীরক-খচিত তলোয়ার পুরস্কার দিব।”