পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সূর্যকিরণের ঢেউ やう● পণ্ডিতেরা বলেন, সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ-তারা এবং আমাদের পুথিবী, ইহাদের মধ্যকার আকাশে এমন কোনো বস্তু আছেই যাহা বাতাস ও জল অপেক্ষা ঢের সূক্ষ্ম। এত সূক্ষ্ম যে কাচ, কাঠ, ইট প্রভৃতির হ্যায় দৃঢ় বস্তুর মধ্য দিয়া ইহার গমনাগমন আছে। ইহাকেও আমরা দেখিতে পাই না । ইহাকে আমরা ঈথর বলি। এই ঈথর সমস্ত আকাশ পরিপূর্ণ করিয়া আছে। যে পর্যন্ত না তোমরা নিজে ঈথর সম্বন্ধে মীমাংসা করিতে সমর্থ হইবে সে পর্যন্ত তোমরা পণ্ডিতদের কথার উপর বিশ্বাস করিয়া এইটি মানিয়া লও যে, অবশ্য ঈথর সমস্ত স্থান ব্যাপিয়া আছে, এবং সমস্ত বস্তুর মধ্য দিয়া ইহার গমনাগমন আছে । সূর্য এবং অন্যান্ত গ্রহ-তারা এই ঈথরের মধ্যে ভাসিতেছে । অতএব সূর্যে বা গ্রহ-তারায় একটা যদি আন্দোলন উপস্থিত হয় তবে এই ঈথরে অবশ্যই তাহার ঘা লাগে । জলে যদি মাছ ধড়ফড় করে তবে তাহার চতুর্দিকে জল নড়িতে থাকে। সূর্যের চতুর্দিকে নানা প্রকার গ্যাস অর্থাৎ বায়ুর পদার্থ তুমুল মাতামাতি করিতেছে। এই গ্যাসের মধ্যকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলি খুব জোরে স্পন্দিত হইয়া ও পরস্পরকে ক্রমাগত আঘাত করিয়া যখন সূর্যে এত আলো ও উত্তাপ স্বষ্টি করিতেছে, তখন কি তোমাদের মনে হয় না যে, পুকুরের জলের ঢেউয়ের মতো সূর্যের নিকটস্থ ঈথর র্কাপিয়া আমাদের নিকট তরঙ্গ প্রেরণ করিতেছে। সূর্যের চতুর্দিক হইতে অবিশ্রাম একটির পর আর-একটি করিয়া ক্ষুদ্র ঢেউ-সকল এই প্রকার ঈথর অবলম্বন করিয়া আমাদের পৃথিবীতে আইসে। পৃথিবীর মধ্যস্থ ভারতবর্ষের অংশটুকু যখন সূর্যের সম্মুখে আসে, তখন সেই ঢেউগুলি ভারতবর্ষের জলস্থলকে আঘাত করিয়া উত্তপ্ত করে, এবং আমাদের চক্ষুর স্নায়ু-সকলকে আঘাত করে বলিয়া আমরা আলোক দেখিতে পাই । সূর্যের সহস্ৰ সহস্র ঢেউ আমাদের চক্ষুতে প্রতি পলকে অনবরত আঘাত করিলে আমরা যে সমস্ত দিন অবিশ্রাম আলোক দেখিতে পাইব ইহাতে আর আশ্চর্য কী । সূর্য যখন অস্ত যায় তখন আমরা নক্ষত্রদিগের কাছ