পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
জয়তু নেতাজী

সুভাষচন্দ্রের পক্ষে আদৌ অসম্ভব নহে। সুভাষচন্দ্র যখন অতিশয় স্বাস্থ্যভগ্ন অবস্থায় মাদ্রাজের জেলে কিছুদিন আবদ্ধ ছিলেন, সেই সময়ে অপর একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বন্দী তথায় ভিন্ন কক্ষে বাস করিতেন। এই বন্দী লিখিয়াছেন, তখন সুভাষচন্দ্র পাকস্থলীর কঠিন ব্যাধিতে মরণাপন্ন, আহার্য্য পথ্য প্রায় কিছুই ছিল না, যাহা ছিল তাহাও তিনি স্বেচ্ছায় গ্রহণ করিতেন না। কিন্তু সেই অবস্থাতেও তিনি প্রত্যহ নিজহস্তে কিছু-না-কিছু খাদ্য পাক করিয়া, জেলের তৃতীয় শ্রেণীর কয়েদীদিগকে আহ্বান করিয়া খাওয়াইতেন, এবং সেই অবকাশে তাহাদিগকে মিষ্টবাক্যে সদুপদেশ দিতেন―নিজে প্রায় অভুক্ত বলিলেও হয়! স্বহস্তে পাক করিতে তিনি ভালবাসিতেন, এবং তাহা অভ্যাস করিয়াছিলেন; তাঁহার মধ্যে যেন একটি মাতৃ-হৃদয় ছিল, এইরূপ পাক করিয়া পরকে খাওয়াইবার আগ্রহ―সেইরূপ স্নেহেরই অভিব্যক্তি।[১] লেখক বলিতেছেন, এই মহা প্রাণ পুরুষকে তিনি পূর্ব্ব হইতেই পূজা করিতেন, এক্ষণে তাঁহার শারীরিক অবস্থা, এবং সেই অবস্থায় নিজের ঔষধ-পথ্য সম্বন্ধে ঔদাসীন্য, এবং তদুপরি এইরূপ সেবাকর্ম্মের পরিশ্রম দেখিয়া তিনি অশ্রু সম্বরণ


  1. দিলীপকুমারও সুভাষ-চরিত্রের এই লক্ষণটির উল্লেখবিশেষভাবে করিয়াছেন, যথা―
    “This element of mothorliness in him had always been a salient feature of his charactor. He had been born with a strong streak of tenderness in his composition.” (The Subhas I Knew, P. 34)