পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৪
জয়তু নেতাজী

অগ্নিতে ইন্ধন দিয়া স্বাধীনতা-সংগ্রাম করিতেছে তাহারা মুষ্টিমেয় কয়েক জন ইংরেজি-শিক্ষিত স্বপ্নবিলাসী মানুষ; তাহাদের মধ্যেও দলাদলি আছে―এবং সকলেই সাধু নয়। এই অনিষ্ট নিবারণ করিতে হইবে, ভারতের জনগণকে এই স্বাধীনতাবাদী বিপ্লবীদের হাত হইতে উদ্ধার করিতে হইবে। ইহার জন্য ব্রিটিশ রাজশক্তির সহিত সন্ধি-স্থাপন, বড় জোর তাহাদের নিকট হইতে শাসনকার্য্যের অংশ গ্রহণ, বা তাহাদের ঐ শাসন-পদ্ধতিটাকে একটু ধর্ম্মশুদ্ধ করিয়া লওয়াই ভারতের প্রকৃত কল্যাণ-সাধন। ইহার একমাত্র উপায়―ব্রিটিশকে সেই কথাটা ভালো করিয়া বুঝাইয়া দেওয়া―উহাতে তাহাদের ক্ষতি অপেক্ষা লাভের দিকটা দেখাইয়া দেওয়া; এবং সহজে না বুঝিলে নানা সংকট ও সমস্যার সৃষ্টি করিয়া তাহাদের দুর্ব্বুদ্ধি দূর করা। ইহাই একমাত্র উপায়; ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামকে ধীরে ধীরে সেই পথে চালিত করাই উৎকৃষ্ট রাজনীতি। উনবিংশ শতাব্দীর সেই ভারতীয় মনোভাব গান্ধী ত্যাগ করিতে পারেন নাই―তিনি দৃঢ় বিশ্বাস করিতেন, ঐ ইংরেজ যতই মন্দ হউক, আর সকল জাতির তুলনায় (ভারতবাসীর তুলনায় তো বটেই) বহু সদগুণের অধিকারী। ইহার একটা কারণ অবশ্য এই ষে, গান্ধীর চারিত্রিক দৃঢ়তা ও একরূপ কর্ম্মবুদ্ধির প্রখরতা সত্ত্বেও, তাঁহার জ্ঞানবৃত্তি (Intellect) অতিশয় সাধারণ স্তরের ছিল―সুভাষচন্দ্রও তাহা বলিয়াছেন; আরও কারণ―তাঁহার সেই বৈশ্যমনোভাব; তিনি ব্রাহ্মণ বা ক্ষত্রিয় ছিলেন না।

 উপরে যাহা বলিয়াছি তাহা উত্তমরূপে বুঝিয়া লইলে, গান্ধীর অভিপ্রায় ও কার্য্যপ্রণালী কিছুমাত্র দুর্ব্বোধ্য হইবে না। সুভাষচন্দ্রের সহিত প্রথম সাক্ষাতে তিনি তাঁহার প্রশ্নের উত্তর দেন নাই কেন, তাহাও বুঝিতে বিলম্ব হইবে না; সুভাষচন্দ্রকে তিনি সেই অপর দলের