পাতা:জয়তু নেতাজী.djvu/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
জয়তু নেতাজী

চিরদিনের সেই ভারতবর্ষ―জগদ্বন্দিত সেই পুণ্যভূমি দ্বিখণ্ডিত হইয়া দুই দেশে পরিণত হইলেও ক্ষতি কি? তিনি তো ভারতের মঙ্গলকেই একমাত্র কাম্য মনে করেন না; ঐ অহিংসা-ধর্ম্মের গৌরব বৃদ্ধি করিতে হইবে―নহিলে সারা পৃথিবীর মঙ্গল হইবে কিরূপে? তিনিই বা জগদ্গুরু হইবেন কেমন করিয়া? সুভাষচন্দ্রও গান্ধীর এই মনোগত অভিপ্রায়কে ভারতের পক্ষে মারাত্মক বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন (পৃঃ ৫০৯)।

 কিন্তু যাহা বলিতেছিলাম। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ব্রিটিশ আপনার বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যরক্ষার অন্য উপায় না দেখিয়া তাহাদের অসাধারণ কূটনীতি প্রয়োগ করিল;―সেই অবস্থায় ভারত-সাম্রাজ্য যতদিন অধিকারে রাখা যায় অথচ অধিকার-ত্যাগের বাহ্যিক যতকিছু লক্ষণ তাহাও নিঃসংশয় হইয়া উঠে―এমনই একটা ব্যবস্থা উদ্ভাবন করিল; ভারতকে স্বাধীনতা-দানের ছলে সম্মুখ হইতে সরিয়া পশ্চাতে আরও দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত হইবার জন্য, ঐ গান্ধী-কংগ্রেসকে, অর্থাৎ গান্ধীগঠিত ক্ষুদ্র দলটিকে ডাকিয়া, তাহাদিগকে কতক গুলি মারাত্মক সর্ত্তে স্বাধীনতা-দান করিতে চাহিল। ব্রিটিশ জনিত, তাহাতেই কার্য্যসিদ্ধি হইবে―গান্ধী-কংগ্রেসকে তাহারা বহুবার বাজাইয়া দেখিয়াছে। তথন সেই কংগ্রেস-চক্রবর্ত্তীগণ গান্ধীর আশীর্ব্বাদ লইয়া ব্রিটিশের প্রায় সর্ব্বস্বার্থসংরক্ষণমূলক এক অপূর্ব্ব দানপত্রে স্বাক্ষর করিল। ঐ ষে স্বাক্ষর, তাহা ভারতবাসী জনগণের স্বাক্ষর নহে―ঐ স্বাক্ষর করিবার পূর্ব্বে, তাহারা, নিয়মরক্ষার জন্যও, কংগ্রেসের পূর্ণ অধিবেশন করিয়া জনগণের প্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণ করে নাই; কেন করে নাই তাহা গান্ধী ও তাঁহার অনুচরগণ নিশ্চয় জানিতেন। এইরূপে তাহারা ভারতের ভাগ্য নিজেদের অভিপ্রায়-মত স্বল্পতম মুনাফায় বিক্রয় করিয়া