পাতা:জাগরণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রে-সাহেব সে প্রজাদের গণদেবতা বলিয়া জ্ঞান করেন, আলেখ্য ও কমলকিরণ তাহাদের মানষের মর্যাদা দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে। তাহদের দ্বাৰ্থ ক্ষণ করিয়া নিজেদের সাবাথ অক্ষণ রাখিতে কত রকম পরিকল্পনাই না করিতেছে। এমন জঘন্যতম প্রতারণার আশ্রয় নিতেও এতটকুও কুণ্ঠাবোধ করিতেছে না। একদিন জমিদারের লক্ষ্য ছিল প্রজাস্বাৰ্থ রক্ষা করা ও প্রজাপালনে ব্ৰতী থাকা আজ সেইখানে প্রজাপীড়নই মল লক্ষ্য বলিয়া পরিগণিত হইতেছে। এইসবে ইন্দর এতটুকুও উৎসাহ নাই। প্রতিবাদ করিবার জন্য সব ঋণী মন গমড়াইয়া মরে, কিন্তু সম্ভব হইয়া ওঠ না। দুই-চারদিনের জন্য বেড়াইতে আসিয়া, আলেখ্যদের আশ্রয়ে থাকিয়া তাহদের কাজের বিরদ্ধে সমালোচনা করিলে বা প্রতিবাদ করিতে গেলে পরিণতি যে সখিকর হইবে না। ইহাতে তিলমাত্র সন্দেহের অবকাশ থাকিতে পারে না। মাত্র কয়েক দিনের পরিচয়ে অমরনাথের অমায়িক আচরণ, চারিত্রিক দঢ়তা নিঃসবাথ প্ররোপকারৱতী মনোভাব, দেশ ও দেশবাসীর প্রতি অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা, আতপীড়িতজনের প্রতি ঐকান্তিক মমত্ববোধ ইশদকে মগধ করিয়াছে। সর্বোপরি তাহার অকৃত্রিম ও অমলিন সৌজন্যবোধের পরিচয় পাইয়া তাহার মনের গোপনকািন্দরে প্রতি তীৱ আকৰ্ষণ অনভব করিতেছে । ध আলেখ্য ও কমলকিরণ হাটের ইজারাদার তারাপদবাবার সহিত কথা বলিতে বলিতে অগ্রসর হইতে লাগিল । ম্যানেজার ব্ৰজবাবও তাহদের সহিত আছেন। বাধক্যজনিত কারণে তাহদের সহিত পা-মিলাইয়া হাঁটিতে পারিতেছেন না। কয়েক পা পিছাইয়া পড়িয়াছেন। ছাতা-মাথায় তাহদের পিছন পিছন হাঁটতেছেন । সালোচনার সহিত ইন্দকে আলোচনারত অবস্থায় আলেখ্য বা কমলকিরণ দেখিতে পাইয়াছে কিনা, বৰঝা গেল না। দূরে হইতে তাহদের আসিতে দেখিয়া ইন্দর মধ্যে কেমন একটি চাঞ্চল্য পরিস্ফটে হইল। তাহার এই আকস্মিক ভাবান্তরটুকু সালোচনার নজর এড়াইল না। সে বিস্ময়, প্রকাশ করিয়া বলিল-কি ব্যাপার, হঠাৎ আপনার মধ্যে কেমন যেন একটি অন্যমনস্কতা লক্ষ্য করছি। ফ্যাকাশে-বিবণ মাখে। ইন্দ কহিলা-আলেখ্যরা আসছে। তাই বঝি ? হাঁ, ঐ যে এদিকেই আসছে। আগচ্ছমান আলেখ্যদের এক পলক দেখিয়া লইয়া সলোচনা বলিল-আমি তবে যাই । অহেতুক আপনাকে বিপদে ফেলতে চাই না । কথা কয়টি বলিতে বলিতে সালোচনা বিদ্যুৎগতিতে সেখান হইতে চলিয়া গেল । সালোচনা বিদায় লইলে ইন্দও ব্যস্ত-পয়ে আলেখ্যদের দিকে হটিতে লাগিল । ইন্দিকে আসিতে দেখিয়া আলেখ্য তারাপদবাবার সঙ্গে কথার ফাঁকে বলিলতোমার ব্যাপারটা কি বল দেখি! সেই যে হাটে পা দিয়েই একটি ঘরে আসছি Af