পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুনিয়া আমার চক্ষু উন্মুক্ত হইয়াছিল। মনুষ্য-জীবন কিরূপ অনিত্য, তাহা আমি বুঝিয়েছিলাম। আমি ভাবিলাম যে, নিয়োগী মহাশয় যেরূপ লোক হউন না কেন, আমি তাঁহার বিচার করিবার কে? মানুষ দোষে গুণে থাকিতে পারে,- যে গুণের পরিচয় আমি প্রাপ্ত হই নাই। দোষের ভাগ ত্যাগ করিয়া, মানুষের গুণের ভাগ গ্ৰহণ করাই যে ভাল, সকলকে আমি এই উপদেশ প্রদান করি। কাহারও প্রতি বিদ্বেষ ভােব মনে স্থান দিও না। কাহাকেও ঘূণা করিও না। কাহারও প্রতি ংসা করিও না। অনেক সময়ে কু-চিন্তা উদয় হইতে পারে। অন্যের ভাল হইয়াছে শুনিয়া, মনে হিংসার উদয় হইলে, তৎক্ষণাৎ তাহা দূর করিতে চেষ্টা করিবে। মনে কু-চিন্তা উদয় হইলে, ক্ৰমাগত ঈশ্বরকে ডাকিতে থাকিবে যে,- “হে ঈশ্বর। আমার মন হইতে এরূপ চিন্তা দূর কর।” এইরূপ ভাবিয়া আমি কঁদিতে কঁদিতে নিয়োগী মহাশয়কে তীহার পুত্রের মৃত্যু-সংবাদ প্ৰদান করিলাম। এরূপ ঘোর দুঃখ-সংবাদ প্রাপ্ত হইয়াও তাঁহার অন্তঃকরণ আর্দ্র হইল না; আমার প্রতি তাহার রাগ দূর হইল না। অন্ততঃ তাঁহার কোপ-দৃষ্টি দেখিয়া আমি তাহাই বুঝিলাম। যাহা হউক, তাহার পুত্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার নিমিত্ত লোক ডাকিয়া আনিবার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করিলাম। সে অনুমতি তিনি আমাকে প্ৰদান করিলেন। গাড়ী করিয়া শীঘ্ৰ আমি লোক ডাকিয়া আনিলাম। তাঁহার পুত্রের সৎকার আমরাই করিলাম। দুই দিন পরে নিয়োগী মহাশয় কলিকাতা হইতে প্ৰস্থান করিলেন। এ পৰ্যন্ত তাঁহার আর কোন সংবাদ আমি পাই নাই। পাইতে ইচ্ছাও বড় করি না। পাল মহাশয়ের ও তাঁহার পুত্রের অনুসন্ধানে পুনরায় আমি প্ৰবৃত্ত হইলাম। তাঁহার সহিত যাহাদুর আলাপ-পরিচয় ছিল, একে একে সকলকে ভৃত্যুর তত্ত্ব জিজ্ঞাসা করিলাম। তাঁহার গ্রামে গিয়া একে একে গ্রামবাসীদিগকে জিজ্ঞাসা করিলাম। আরও কত স্থানে গিয়া অনুসন্ধান করিলাম। কিন্তু কেহই তাঁহারু সন্ধান আমাকৃেত্ত্বিলি দিতে পারিল না। মিহির নিরপরাধ প্রমাণিত হইয়াছে, আর লুক্কায়িত থাকিবীরত্নোবশ্যক নাই, এই মৰ্ম্মে দুইখানি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন প্ৰকাশ করিলাম। তাঁহাতেও কোষ্ট্ৰটফল হইল না। কিন্তু তাঁহাদের সহিত পুনরায় যে আমার দেখা হইবে, সে বিষয়ে আমি ইর্তিাশ হইলাম না। কারণ, পাল মহাশয় সম্পত্তিশালী লোক। একদিন না একদিন তাঁহাকে 'দেশে আসিতেই হইবে। তাহা ব্যতীত, কলিকাতার বাসা তিনি একেবারে পরিত্যাগ করিয়া যান নাই। কলিকাতার সেই তিনটি ঘরে তাহার জিনিসপত্র আছে। তাহাতে চাবি দিয়া গিয়াছেন। একদিন না একদিন কেহ না কেহ সে দ্রব্যাদি লইতে আসিবে। এই প্ৰত্যাশায় আমি দিনাতিপাত করিতে লাগিলাম । পঞ্চদশ অধ্যায় আশু কষ্ট পরে ইষ্ট এইরূপে আরও তিন মাস কাটিয়া গেল। ভাদ্র মাস পড়িল। সে বৎসর দারুণ বর্ষ হইয়াছিল। পথঘাট জলে জলমগ্ন ও কাদায় কর্দমময় হইয়াছিল। একদিন অপরাহ চারিটার সময় আফিসে বসিয়া কাজ করিতেছি, এমন সময় একজন উৎকলাবাসী আমাকে একখানি চিঠি আনিয়া দিল। সে পত্রে কেবল এই কয়টি কথা লেখা ছিল,— “অনুগহ করিয়া অতি গোপনে এই লোকের BMbr দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com"র্জ্যািক্যনাথ চক্ষসিংহই