প্রাণ রক্ষা করিয়াছেন। আমি তাহাকে লইয়া আসিলাম । রোগিণীকে পরীক্ষা করিয়া ডাক্তারবৈদ্যগণ যাহা বলিয়াছিলেন, তিনিও তাঁহাই বলিলেন। ২০শে শ্রাবণ পৰ্যন্ত জীবিত থাকা সম্ভব নহে, রায়-গৃহিণীকেও তাঁহা বােধ তিনি প্রকাশ করিয়া বলিয়াছিলেন। রোগিণী ও চিকিৎসক দুইজনে ফুসফুস করিয়া পরামর্শ হইতে লাগিল। দিন দুই পরে, একদিন রায়-গৃহিণী আমাকে বলিলেন— “বড়ালমহাশয়! আমার একটি কথা রাখিতে হইবে। আমার নিকট একটি সত্য করিতে হইবে। ডাক্তার সে স্থানে উপস্থিত ছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,-“কি সত্য করিতে হইবে?” রায়-গৃহিণী উত্তর করিলেন,- “উইলের সময় পৰ্যন্ত যদি আমি জীবিত না থাকি, তাহা হইলে সুবালা যাহাতে সম্পত্তি পায়, তাহা আপনাকে করিতে হইবে। সে কাৰ্য্যে ডাক্তার মহাশয় আপনার সহায়তা করিবেন।” আমি উত্তর করিলাম,- “কি করিয়া তাহা আমি করিব? আমি সামান্য ব্যক্তি। আমার ক্ষমতা কি?” ডাক্তার বলিলেন,- “ধনবান লোকদিগের ঘরে এরূপ ঘটনা প্ৰায়ই ঘটিয়া থাকে। আমি উইল করিব, ধনবান লোক এইরূপ মানস করেন। আজ করিব, কাল করিব বলিয়া দিনপাত করিতে থাকেন। অবশেষে হঠাৎ একদিন তাহার মৃত্যু হয়। তখন তাঁহার কৰ্ম্মচারিগণ অথবা আত্মীয়স্বজন একখানি উইল প্রস্তুত করেন। ইহাতে কোন পাপ নাই। কারণ, তিনি যেরূপ ইচ্ছা করিয়াছিলেন, উইল সেইভাবে প্ৰস্তুত হইয়া থাকে। এ ক্ষেত্রেও তাঁহাই হইবে। রায়মহাশয় যেরূপ ইচ্ছা করিয়াছিলেন, ইনি এক্ষণে যেরূপ ইচ্ছা করিতেছেন, উইল ঠিক সেইরূপ হইবে। ভগবান করুন। ইহার অবৰ্ত্তমানে আমাদিগকে এ কাজ না করিতে হয়। অদ্য আমি যে ঔষধ প্ৰদান করিয়াছি, তাহার গুণে ইনি হয়ত অনেক দিন জীবিত থাকিবেন।” S. সকলেই অবগত আছে। কবে ইহার পঞ্চাশ বৎসর বয়ঃক্রম পূর্ণ হইবে, সকলে তাহা শুনিয়াছে। অতএব তাহার পূৰ্ব্বে যদি কোনরূপ অমঙ্গল ঘটে, তাহা হইলে কি হইবে?” ডাক্তার উত্তর করিলেন,- “সে সম্বন্ধে কোন চিন্তা নাই। আমরা তাহা গোপন রাখিব।” “সেইদিন হইতে রোগিণীর নিকট বাহিরের লোক কেহ যাইতে পাইত না। কেবল ডাক্তার, আমি, আমার স্ত্রী ও ধনুকধারী, এই কয়জনে তাঁহার সেবা-শুশ্ৰষা করিতাম। তোমার দিদিমণি ক্রমেই ক্ষীণ হইয়া পড়িলেন। ডাক্তারের আদেশে কলিকাতা হইতে প্রতিদিন দুই মণ বরফ আসিতে লাগিল। কাসিরোগের চিকিৎসার জন্য শীতল বরফ! সকলে আশ্চৰ্য হইল, কিন্তু কেহ কিছু বলিল না। ডাক্তার বরফ ব্যবহার করিতেন না। ঐ অন্ধকার ঘরে পড়িয়া বৃথা গলিয়া যাইত। ডাক্তারের আজ্ঞায় চারি হাত লম্বে ও দুই হাত প্রস্থে একটি কাঠের বাক্স আমি প্ৰস্তুত করাইলাম। তাহাও তিনি ঐ অন্ধকার ঘরে য়াখিয়া দিলেন।” বড়ািলনী বলিলেন,—“কি করিয়া তাহার নাম স্বাক্ষর করতে হয়, এই সময় রায়-গৃহিণী আমাকে শিক্ষা দিতেছিলেন।” বড়ালমহাশয় বলিলেন,-“হা, পূৰ্ব্ব হইতেই তিনি নিজে স্থির করিয়াছিলেন যে, যদি তাহার মৃত্যু হয়, তাহা হইলে আমার স্ত্রী উইলে সহি করিবেন। শেষ পৰ্যন্ত তাঁহার সম্পূর্ণ জ্ঞান RONA দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comন্মিলাকনাথ রচনাসংগ্ৰহ
পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭১১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
![](http://upload.wikimedia.org/wikisource/bn/thumb/7/7e/%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%88%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A5_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9.djvu/page711-1024px-%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%88%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A5_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9.djvu.jpg)