পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৮৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুমি মরিয়া যাইতে। দুইদিন পরে তোমার ধড়টি পচিয়া যাইত, অথবা পুড়িয়া ছাই হইত। অতএব তোমার এই শরীরটি এখন আমার। আমার চাষ আছে। যতদিন বঁাচিবে, ততদিন আমার ক্ষেত্রে তোমার কাজ করিতে হইবে।” এই কথা বলিয়া আমার গলায় গরুর দড়ি দিয়া তিনি টানিতে লাগিলেন। চঞ্চলার পিতা সহদেব তাঁহার হাত হইতে দড়ি কাড়িয়া লইল । সে বলিল,- “ভাল রে ভাল! ইনি তোমার? সে কিরূপ কথা? ইহার আধখানা চঞ্চলার গাই। এখনও ইহার দুধ হইবে। আমরা ইহাকে ছাড়িয়া দিব না।” আমাকে লইয়া দুইজনে বিবাদ বাধিয়া গেল। এ বলে ইনি আমার প্রাপ্য, ও বলে আমার প্ৰাপ্য। ক্রমে হাতাহাতি হইবার উপক্রম হইল। অবশেষে গ্রামের লোক সমস্যার এইরূপ মীমাংসা করিয়া দিল। দিনের বেলা আমাকে ভিকু ডাক্তারের কাছে থাকিতে হইবে। সমস্ত দিন তিনি আমাকে খাটাইয়া লইবেন । রাত্রিকালে আমি চঞ্চলার গোয়ালে বাধা থাকিব। প্ৰাতঃকালে চঞ্চলা আমার দুধ দুহিয়া ভিকু ডাক্তারের বাড়ীতে আমাকে পাঠাইয়া দিবে। একবেলা ভিকু ডাক্তার আমাকে খাইতে দিবেন, অন্য বেলা সহদেব বাগদী আমাকে খাইতে দিবে। প্ৰথম দিন আর আমাকে কোন কাজ করিতে হয় নাই। সেদিন চঞ্চলার গোয়ালে খোঁটায়। আমি বাধা রহিলাম, পাছে হাত দিয়া দড়ি খুলিয়া আমি পলায়ন করি, সেজন্য হাত দুইটিও তাহারা বধিয়া রাখিল । ইহার পর প্রতি রাত্রিতে তাহারা এইভাবে আমাকে বধিয়া রাখিত, সন্ধ্যাবেলা চঞ্চল আমাকে দুইটি মুড়ি খাইতে দিল। ইহাদের নিকট ছিলাম, ততদিন দুই বেলা দুইটি মুড়ি আমার আহার ছিল। ডাক্তার দিত, অন্য বেলা চঞ্চল দিত। আমার দীত নাই, মুড়ি চিবাইতে পারিভাষািপ প্ৰাণধারণের নিমিত্ত কােনরূপে গিলিয়া ফেলিতাম । (C) পরদিন প্ৰাতঃকালে চঞ্চলা আমার দুধ করিল। প্রায় দুই সের দুধ হইল। তাহার পর সে বাছুর ছাড়িয়া দিল, বাছুর খাইতে লাগিল ও মাঝে মাঝে বাছুর আমার পেটে মাথায় ঔতো মারিতে লাগিল। তাহার ঔতোতে আমি অস্থির হইয়া পড়িলাম। ভাগ্যক্রমে এই সময় ভিকু ডাক্তার আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি বলিলেন,- “ডমরুবাবুর ঐ পেট এখন আমার। পেট আমার ভাগে পড়িয়াছে। পেটে আমি বাছুরকে মারিতে দিব না। তাহার ঢুতে যদি ডমরুবাবুর নাড়ী-ভুড়ি ছিড়িয়া যায়, তাহা হইলে তোমাদের নামে নালিশ করিব।” সেইদিন হইতে চঞ্চলা বাছুরের দড়ি টানিয়া রাখিত। বাছুর আমার পেটে আর ঔতো মারিতে পারিত না । দুধ দোহন হইলে ভিকু ডাক্তার আমাকে তাঁহার ক্ষেত্রে লইয়া গেলেন। কৃষককে বলিলেন যে,- “একটা গরুর সহিত ইহাকে লাঙ্গলে জুড়িয়া দাও।” কৃষক তাঁহাই করিল। মানুষের হাত কোমল তাঁহাতে ক্ষুর নাই। কিন্তু এখন আমাকে দুইটি হাত মাটিতে পাতিয়া গরুর ন্যায় চরিতে হইয়াছিল। আমার হাতে কাটা খোঁচা ফুটিয়া যাইতে লাগিল। ঘোরতর কষ্টে আমার চক্ষু দুইটি জলে ভাসিয়া গেল। আমি ভাবিলাম যে, আমার নুদুস-নাদুস নধর শরীরটি এইবার মাটি হইয়া গেল। আমার সঙ্গী বলদের সহিত সমানভাবে আমি ক্ষেত্রের উপর লাঙ্গল কাঁধে করিয়া চলিতে পারিতেছিলাম না, সেজন্য কৃষক আমার লাঙ্গুলে সবলে মোচড় দিতে লাগিল। এমন সময় সহদেব সেই স্থানে আসিয়া উপস্থিত হইল। সহদেব বলিল,- “ও কি! তুমি উহার লেজ মলিতে পাড়িবে না। লেজ তোমাদের নহে, লেজ ክrርrS fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboicorf**