পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবনের সন্ধানও জানতেন না। তাই তাঁর সজনে গাছ পোঁতা, হরি রায়ের জমি নেবার পরামর্শ, বিয়ে না করতে চাওয়ায় সংসার উলেট গেল এই ভাবে কান্না—যেন সত্যই তাঁর সংসার উলেটই গোল—তাঁর সংসার-আমার সংসার নয়। মাথার উপরের নক্ষত্ৰজগতের দিকে চেয়ে দেখলাম, এই জীবন ঐ পয্যন্ত বিস্তৃত। কত এরকম জ্যোৎস্না রাত্রি, কত এরকম যাওয়া আসা, কত জীবনানন্দ। যে যাই ভাবকে আমি দঢ় বিশ্ববাস করি—শাধ বিশ্ববাস বলে নয়—যেন দেখতেও পাই, হাজার হাজার বছর পরে ঐ আমার শৈশব-আনন্দভরা ভিটার মত আর কোন দেশে জন্মে অপবােব আনন্দভরা শৈশব যাপন করবো-পথিবী-মায়ের বকে নতুন হয়ে ফিরে আসবো! সে যাক, দািব্বল-দন্টি লোকে ভাবে আমি হয়েছি। Theosophist. জীবন ভোগ করতে হলে হৈ হৈ করে কাটিয়ে দিলে ভোগ হয় না-চাই চিন্তা, ধীর চিন্তা। গভীর চিন্তাতে জীবনরহস্যের গভীর অনভূতি হয়। সেই ছেলেবেলার এই ফালগনে বেল কুড়ানো, চড়কগাছ খেলা, সেই মা, জেঠীমা, নেড়া, ভরত -সে জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই চাঁপাপকুরের ধার, সেই যে কাদের বাড়ী বেড়াতে গেলাম, সেখানেও আজকার মত জ্যোৎসনা উঠেছে—সে জীবনও শেষ হয়ে গিয়েছে। আমায় দরে যেতে হবে—বহােদর। তাহলে ভারী চমৎকার জীবনের উপভোগ হবে। জ্যোৎস্না রাত্রি ফজিসান পৰ্ব্বতে, কি প্যারিসের কোনো বলভার-এর ধারে, কি সমদ্রের উপর জাহাজে, কি ইজিপ্টের লক্সের, কি করনাকের মন্দিরের মধ্যে, নাবিয়া মরভূমির উপরে—এইসব ভাবি। ৷৷ ১লা মাচ্চ, ১৯২৮ ৷৷ কাল সন্ধ্যার পর ভাবলাম, দোলপণিমার রাত্রে ঘোড়ায় বেড়াতে হবে। খব বেলা গেলে বেরিয়ে রামজোতের বাগানের কাছে যেতেই জ্যোৎসনা উঠে গেল। রামচন্দ্ৰ সিং-এর সঙ্গে কথা ক'য়ে বড় কুন্ডীটার ধার দিয়ে নিজজন কাশ-জঙ্গলের পথে ঘোড়া চালিয়ে দিলাম। খব জ্যোৎসনা উঠেছে। নিজজন। বহরদার পর্য্যন্ত কেউ কোথাও নেই। শােধ কাশ-জগুগল, আর জলের ধার। লোধাইটােলার জঙ্গল পৌরয়ে জলাটার ওপর বড় সন্দর জ্যোৎসনা পড়েছে—খনিকক্ষণ ঘোড়া ইচ্ছামত ছেড়ে দিয়ে বসে রইলাম। তারপর খাব জোরে ঘোড়া চালিয়ে ফিরে এলাম। আজ পণিমার রাত্রি। সারাদিন ভীষণ পশ্চিমা বাতাস বয়েছে—এখনও সমানে বইছে। ধলো-বালিতে চারধারা ভরপর, পণিমার জ্যোৎস্না, বালি-ধলোর পদােয় মালান করে দিয়েছে—ঘোলা ঘোলা জ্যোৎস্না। সামনের ধৰ ধৰ কাশবনগলো জোৎস্নায় অদভুত দেখাচ্ছে, হাওয়ায় নিয়ে নিয়ে পড়েছে—বহােদর জঙ্গলে আগমন লেগেছে, সেদিকের আকাশটা রাঙা হয়ে উঠেছে। আর মাঝে মাঝে দাউ দাউ করে লকলকে আগনের শিখা খােব উচু হয়ে আকাশটাকে লেহন করতে ছটছে। বাংলাদেশের শান্ত দশ্যের কাছে এই নিজজন বাত্যাক্ষব্ধ ধরে ধী জ্যোৎস্নাভিরা মাঠ। জঙ্গলের দশ্য, ঐ বনের আগন, এই ধলোেভরা আকাশ কি অদভুত মনে হয়! ॥ ७३ भाषा', 'ss २४ ॥ রামবাবার ঘোড়াটা চড়ে বড় আরাম পাওয়া গেল। কাল বৈকালে, পরশ বামপরের মাঠে একেবারে সোজা কদমচালে চলে গেল-আজ তেলির সাক্ষী দিতে নও Gf.